বাড়তি প্রণোদনায় বাড়ছে রেমিট্যান্স
ডলার কেনার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো নতুন করে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া শুরু করায় ব্যাংকিং চ্যানেলে বেশি করে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। চলতি মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬৫ কোটি ডলার, যা আগের মাসের ৩০ দিনের চেয়েও বেশি।
রোববার (২৯ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এ মাসের প্রথম ২৭ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬৪ কোটি ৯৩ লাখ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১১ কোটি ৯০ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৪ কোটি ৯৬ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৪৭ কোটি ৫৬ লাখ ৯০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কাটাতে কিছুটা বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। প্রবাসী আয়ে সরকারের আড়াই শতাংশ প্রণোদনা আগে থেকেই ছিল, তার সঙ্গে আরও আড়াই শতাংশ যোগ করেছে ব্যাংকগুলো। ফলে এখন ৫ শতাংশ বেশি দামে ডলার পাঠাতে পারছেন প্রবাসীরা। অর্থাৎ আন্তব্যাংক লেনদেনের ক্ষেত্রে ডলারের যে দাম ঠিক করা হয় তার চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি দাম পাচ্ছেন প্রবাসীরা। এই মুহূর্তে তারা প্রতি ডলারে ১১৬ টাকা পাচ্ছেন। এতে করে তারা বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন।
আরও পড়ুন
রেমিট্যান্সে প্রণোদনা দেওয়া ভালো পদক্ষেপ হলেও এতে দীর্ঘ মেয়াদি সুফল আসবে না বলে জানিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সানেমে’র নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, সবমিলিয়ে ৫ শতাংশ প্রণোদনা পাবে প্রবাসীরা। এটা তাদের জন্য কিছুটা ভালো হলো। এ ধরনের পদক্ষেপ সাময়িক সময়ের জন্য রেমিট্যান্স বাড়াবে, তবে দীর্ঘমেয়াদি কোনো সমাধান হবে না।
তিনি বলেন, রেমিট্যান্স বাড়াতে হলে হুন্ডি বন্ধ করতে হবে। আর হুন্ডি বন্ধ করতে হলে অর্থপাচার বন্ধ করতে হবে। এখন প্রচুর অর্থ বিদেশে পাচার হচ্ছে, এটা যেকোনো উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ব্যাংকগুলো যত বেশি প্রণোদনা দেবে হুন্ডির লোকজন তার চেয়ে বেশি প্রণোদনা দেবে। তাই হুন্ডি যতক্ষণ পর্যন্ত রমরমা থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত বৈধ পথে আশানুরূপ রেমিট্যান্স আসবে না।
এদিকে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ ধারাবাহিকভাবে কমে গিয়েছিল। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার, আগস্টে এসেছে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার আর সেপ্টেম্বরে এসেছে মাত্র ১৩৪ কোটি ডলার যা ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
এসআই/এমএ