পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বেড়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা
দরপতন ও ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা পুঁজিবাজারেও গত ৮ মাসে ব্যাংকগুলো নতুন করে তিন হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। বর্তমানে দেশের পুঁজিবাজারে ৩৫টি সরকারি ব্যাংক তালিকাভুক্ত রয়েছে। এই ব্যাংকগুলো নিয়ম অনুসারে আরও ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, পুঁজিবাজারে বর্তমানে তালিকাভুক্ত ৩৫টি ব্যাংক। এই ব্যাংকগুলোর ক্যাপিটাল বা মূলধন হচ্ছে ৮৩ হাজার ৪১৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এই মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ নিয়ম অনুসারে ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে। যা টাকার অংকে ২০ হাজার ৮৫৩ কোটি ৯৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ব্যাংকগুলো চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেছে ১৫ হাজার ৫৩৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ এখনো ব্যাংকগুলো ৫ হাজার ৩১৯ কোটি ৮১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে পারবে।
সূত্র মতে, চলতি বছরের শুরুতে অর্থাৎ ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ছিল ১২ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। আট মাস পর গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত নতুন করে ৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ বেড়েছে। তাতে বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। নিয়ম অনুসারে এখনো আরও ৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে পারবে ব্যাংকগুলো।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তিন কারণে টালমাটাল পুঁজিবাজারেও ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ করেছে। প্রথমত, ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজার থেকে বন্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে মূলধন বাড়িয়েছে। এ ক্ষেত্রে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার একটি নির্দেশনা ছিল যে, যেসব ব্যাংক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করবে তাদের বন্ড অনুমোদন দেওয়া হবে। ফলে বন্ডের অনুমোদনের জন্য বেশ কিছু ব্যাংক বাধ্য হয়েই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেছে। আর ব্যাংকগুলোর বন্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে ব্যাংকের মূলধনকে আরও শক্তিশালী করেছে।
দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক মন্দার এই সময়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেশ কিছু কোম্পানি ভালো লভ্যাংশ দিয়েছে। সেই মুনাফার আশায় ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ করেছে।
তৃতীয় কারণ হলো- ফ্লোর প্রাইসের এই বাজারেও কারসাজি চক্রের সঙ্গে মিলে বিমা কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করেছে কয়েকটি ব্যাংক। এসব শেয়ারের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ পাশাপাশি ওষুধ ও বস্ত্র খাতের ছোট মূলধনী ও দুর্বল কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছে। এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে ব্যাপক ক্যাপিটাল গেইন করেছে ব্যাংকগুলো। এ কারণে তারা বিনিয়োগ করেছে।
অপরদিকে বিপরীত চিত্র দেখা গেছে বেশ কিছু ব্যাংকে। ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, অর্থনৈতিক সংকট ও ফ্লোর প্রাইসের কারণে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে বেশ কঠিন সময় পার করেছে ব্যাংকগুলো। তার কারণ বেশির ভাগ ব্যাংক তালিকাভুক্ত ব্যাংকের শেয়ারে অনেক বিনিয়োগ করেছে পাশাপাশি ভালো মৌল ভিত্তি কোম্পানিতেও বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু এক বছরের বেশি সময় ধরে বাজারে এসব ব্যাংকের শেয়ারের দাম বাড়েনি বরং তলানিতে রয়েছে। তার ওপর আবার পুঁজিবাজারে আরোপ রয়েছে ফ্লোর প্রাইস। ফলে শেয়ার বিক্রি করে অন্য শেয়ারে বিনিয়োগ করবে সেটাও করতে পারেনি। তারা বলছেন বাজার ভালো হলে ব্যাংকগুলোর মুনাফাও বাড়বে। পাশাপাশি বিনিয়োগের সুযোগ বাড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে,সক্ষমতার দিক দিয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের শীর্ষে রয়েছে- এনআরবি কর্মাশিয়াল ব্যাংক লিমিটেড। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক। তৃতীয় স্থানে রয়েছে মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেড। এরপর ছিল- ন্যাশনাল ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, দ্যা প্রিমিয়ার ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক এবং এবি ব্যাংক লিমিটেড।
অপরদিকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পুঁজিবাজারে সব চেয়ে কম বিনিয়োগ করেছে আইসিবি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। এরপর ছিল ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী বাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক,ব্র্যাক, সিটি, এক্সিম ব্যাংক,রূপালী এবং ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড।
যা বলছেন ব্যাংকাররা
ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সেলিম আর এফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা নিজস্ব পরিকল্পনা অনুসারে বিনিয়োগ করি। বাজারে যা অবস্থা আপাতত বিনিয়োগের পরিকল্পনা নেই।
ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) এই চেয়ারম্যান বলেন, প্রত্যেক ব্যাংক তাদের নিজস্ব পরিকল্পনা অনুসারে বিনিয়োগ করে। যেখানে বিনিয়োগ করলে ভালো রিটার্ন আসবে, সেখানেই বিনিয়োগ করে। কিন্তু বর্তমানে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে রিটার্ন না আসার শঙ্কা রয়েছে, সে জন্য কোম্পানিগুলো ভয় পায়।
ন্যাশনাল ব্যাংকের কোম্পানি সচিব কায়সার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঢাকা ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক ও বড় কোম্পানির শেয়ার দীর্ঘদিন ধরে কেনা রয়েছে। নতুন করে আমাদের বিনিয়োগের সুযোগ নেই। কারণ আমাদের সেই পরিমাণ টাকা নেই। কিন্তু আমরা যে পরিমাণ বিনিয়োগ করেছি মার্কেট পজেটিভ হলে আমরা লাভবান হবো।
ব্যাংকটির ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইকুইটি বিভাগের প্রধান কামরুন্নাহার ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুঁজিবাজারে ছিলাম, পুঁজিবাজারের সঙ্গে আছি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের ব্যাংকের তারল্য সংকট ভালোই রয়েছে।
তিনি বলেন, আগের বছরগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে বর্তমানে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ থেকে লাভ নেই বললেই চলে। রিয়েলাইজ গেইন একদমই নেই। শুধু মাত্র ব্যাংকগুলোর শেয়ারের বিনিয়োগ থেকে লভ্যাংশ বাবদ যে মুনাফা দিয়েছে সেটা পেয়েছি। ওইটা দিয়ে খাতায় নাম লেখার মতো মুনাফা এসেছে।
ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইকুইটি বিভাগের প্রধান আরও বলেন, ফ্লোর প্রাইসের কারণে এখন সেই শেয়ারগুলো বিক্রি করতে পারছি না। এ রকম আগের কখনো হয়নি। এতো খারাপ সময় যায়নি।
এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক(এমডি) অ্যান্ড সিইও গোলাম আউলিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুঁজিবাজার চাঙ্গা রাখতে ব্যাংকগুলো সবসময় কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে। আমরা এনআরবিসি ব্যাংক পরিকল্পিতভাবে যথার্থ বিনিয়োগ করেছি। বাজারে এখনও ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ার রয়েছে, যাদের শেয়ারমূল্য আমি মনে করি ফেসভ্যালুর নিচে। যাদের সুযোগ আছে তারা দেখে শুনে এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে পারে। এতে ব্যাংক নিজে যেমন লাভবান হবে তেমনি পুঁজিবাজার উপকৃত হবে। আর পুঁজিবাজার চাঙ্গা হলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন। বিনিয়োগকারী ও কোম্পানির ‘উইন উইন’ অবস্থানে দেশের সার্বিক অর্থনীতির গতি আরও বৃদ্ধি পাবে।
অর্থনীতিবিদদের মতামত
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআইবি) নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিশ্বব্যাপী চলমান অর্থনৈতিক সংকটের প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। ফলে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতেও তারল্য সংকট রয়েছে।
বিপরীতে পুঁজিবাজারের অবস্থা খুব বেশি ভালো না। এই মুহূর্তে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করলে যে মুনাফা পাওয়া যাবে, বেশির ভাগ ব্যাংকের সে নিশ্চয়তা নেই। তাই তারা পুঁজিবাজারে দেখে-শুনে বিনিয়োগ করছে।
কোন ব্যাংকের পুঁজিবাজারে কত টাকা বিনিয়োগ
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুসারে পুঁজিাবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো রেগুলেটরি ক্যাপিটালের ২৫ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবে। সেই নিয়ম অনুসারে কোনো ব্যাংকই ২৫ শতাংশের কোটা পূরণ করেনি। তবে কোটা পূরণের কাছাকাছি রয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংকগুলো। আর টাকার অংকে বিনিয়োগের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ইউসিবি এবং প্রাইম ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের চিত্র নিম্নে দেওয়া হলো।
চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এবি ব্যাংক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেছে ৪৩৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা। যা গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ছিল ৪০৭ কোটি টাকা। ব্যাংকটির মোট মূলধন ২ হাজার ৭৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা। প্রতিষ্ঠানটি নিয়ম অনুসারে বিনিয়োগ করতে পারবে ৫১৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের মূলধন ২ হাজার ২৯৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। ব্যাংকটির পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ রয়েছে ৫৪৮ কোটি ৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ শতাংশের হিসেবে বিনিয়োগ সীমার ২৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ বিনিয়োগ করেছে। ব্যাংকটি আরও ১ দশমিক ১২ শতাংশ অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে।
ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেছে ৫৩৫ কোটি টাকা ৮৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ ২০ দশমিক ২১ শতাংশ। সিটি ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে ৪৪৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ বিনিয়োগ সীমার ১৪ দশমিক ২১ শতাংশ।
ডাচ বাংলা ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে ৪০৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ বিনিয়োগের ১০ দশমিক ২৪ শতাংশ। ঢাকা ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে ৪৭৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। প্রতিষ্ঠানটি ২ শতাংশের বেশি বিনিয়োগ করতে পারবে।
ইস্টার্ন ব্যাংক বিনিযোগ করেছে ৫০৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। যা বিনিয়োগ সীমার ১৫ দশমিক ৯২ শতাংশ।
পুঁজিবাজারে এক্সিম ব্যাংকের বিনিয়োগ ৪৪২ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে ২১৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ১৬১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছে, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে মাত্র ১ কোটি ৬ লাখ টাকা।
আইএফআইসি ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে ৫১০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, শতাংশের হিসেবে ১৭ দশমিক ২ শতাংশ। ইসলামী ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে ৭৯০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, যা শতাংশের হিসেবে ২০ শতাংশের বেশি।
যমুনা ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে ৩১৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা, যা শতাংশের হিসেবে ১৭ শতাংশের বেশি। মার্কেন্টাইল ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে ২৯২ কোটি ১২ লাখ টাকা, যা শতাংশের হিসেবে ১৩ শতাংশ।
মিডল্যান্ড ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে ১৮২ কোটি ২৪ লাখ টাকা, যা শতাংশের হিসেবে ২৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের বিনিয়োগ ৪০০ কোটি টাকা,যা শতাংশের হিসেবে ২০ দশমকি ২৬ শতাংশ।
এছাড়াও ন্যাশনাল ব্যাংকের বিনিয়োগ ৯৬৩ কোটি টাকা, যা শতাংশের হিসেবে ২৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এনসিসি ব্যাংকের বিনিয়োগ ৪৯৩ কোটি টাকা, যা শতাংশের হিসেবে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
এনআরবিসি ব্যাংকের বিনিয়োগ ৩১৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা, যা শতাংশের হিসেবে ২৪ শতাংশ। ওয়ান ব্যাংকের বিনিয়োগ ৩৭৪ কোটি টাকা,যা যা শতাংশের হিসেবে ২০ দশমিক ৭১ শতাংশ।
পুঁজিবাজারে প্রাইম ব্যাংকের বিনিয়োগ ৬৭৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা,যা শতাংশের হিসেবে ২২ শতাংশ। প্রিমিয়ার ব্যাংকের বিনিয়োগ ৫২৫ কোটি টাকা, যা শতাংশের হিসেবে ২০ শতাংশের বেশি। পূবালী ব্যাংকের বিনিয়োগ ৬৩১ কোটি টাকা, যা ১৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগ রয়েছে ৪২৯ কোটি টাকা,যা ১৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
অপরদিকে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে ৩৮১ কোটি ৫ লাখ টাকা, যা শতাংশের হিসেবে ২১ দশমিক ৫২ শতাংশ। সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে ২১০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, যা শতাংশের হিসেবে ১৯ শতাংশ ৩৫ শতাংশ।
সোসাল ইসলামী ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে ৩৮৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। যা ১৯ শতাংশের বেশি। সাউথইস্ট ব্যাংকের বিনিয়োগ ৪৯২ কোটি ১৬ লাখ টাকা, যা শতাংশের হিসেবে ১৮ দশমকি ৯০ শতাংশ।
পুঁজিবাজারে ট্রাস্ট ব্যাংকের বিনিয়োগ ৩৮২ কোটি ৯১ লাখ টাকা, শতাংশের হিসেবে ১৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। ইউনিয়ন ব্যাংকের বিনিয়োগ ১৪৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা; যা বিনিয়োগের ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। ইউসিবি পুঁজিবাজারে মূলধনের ৭৪০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে, যা শতাংশের হিসেবে ১৯ শতাংশ।
উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড বিনিয়োগ করেছে ২৪৩ কোটি টাকা, শতাংশের হিসেবে যা ১৫ দশমিক ৯১ শতাংশ এবং রূপালী ব্যাংকের বিনিয়োগ ২৪১ কোটি ৯২ লাখ টাকা,যা শতাংশের হিসেবে ১৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উত্তম সময় : বিএসইসি
পুঁজিবাজারে গত এক থেকে দেড় বছর ধরে একই জায়গায় আছে। সেই হিসেবে শেয়ারের দাম তলানিতে রয়েছে। এখন বিনিয়োগ করলেই বাজার ভালো হবে। সুতরাং বিনিয়োগের এখনই উত্তম সময় বলে মনে করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম।
তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরাতে কাজ করছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়াতে কাজ করছে বিএসইসি। বিএসইসির পক্ষ থেকে বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যাংকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তদারকি করা হচ্ছে,তারাও মুনাফার মুখ দেখে বাজারে আসছে।
নতুন বিনিয়োগ এলে বাজারের চেহারাই পাল্টে যাবে
সার্বিক বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন বলেন, পুঁজিবাজারে এখন দুটি সংকট রয়েছে। একটি আস্থার, আরেকটি তারল্য অর্থাৎ নতুন ফান্ডের। তিনি বলেন, বাজারে এই মুহূর্তে নতুন ফান্ড নেই। ব্যাংকগুলো যদি তাদের ফান্ডের কিছু অংশ বিনিয়োগ করে তবেই বাজারের চেহারা পাল্টে যাবে।
এমআই/এনএফ