সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে ধস
‘আগামী সপ্তাহে ব্যবসায়ীসহ আরও বেশ কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভিসা নিষেজ্ঞায় দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র’ -এমন খবরে পুঁজিবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। ক্রেতাশূন্য পুঁজিবাজারে শেয়ার বিক্রির চাপের ফলে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার (৮ অক্টোবর) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ২৪ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক কমেছে ৫৪ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি কমেছে লেনদেনও। এ দিন ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার, মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং বন্ডের দাম কমার বিপরীতে বেড়েছে মাত্র ১৪টি প্রতিষ্ঠানের। অপরিবর্তিত ছিল ১৪৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইসরাইল ও হামাসের যুদ্ধ এবং আগামী সপ্তাহে ব্যবসায়ীসহ আরও বেশ কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেজ্ঞায় দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র -এমন খবরে পুঁজিবাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে নতুন বিনিয়োগ না করে শেয়ার বিক্রির টাকা তুলে নিচ্ছে। ফলে বোরবার পুঁজিবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। কমেছে লেনদেন, সূচক ও বিনিয়োগকারীদের পুঁজি।
গতকাল ৭ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকে খবর ছাপা হয়েছে যে, ‘আসছে মার্কিনি ঝড়’। আগামী সাত দিনের মধ্যে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে এক বিপজ্জনক অর্থনৈতিক ঘূর্ণিবার্তার ঝাপটা আসার লক্ষণ দেখা দিয়েছে। এই ঝাপটা আসতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা অর্থনৈতিক মহল থেকে। এ ব্যাপারে পাশ্চাত্যের অর্থনৈতিক মোড়লরা এখন কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে।
ডিএসইর দেওয়া তথ্য মতে, রোববার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ২৪ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৩৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
প্রধান সূচকের পাশাপাশি অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস শরীয়াহ সূচক ৪ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৫১ পয়েন্টে। ডিএস-৩০ সূচক ৬ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৩০ পয়েন্টে।
এদিন বাজারে লেনদেন হওয়া ২৯৭টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৪টির। বিপরীতে কমেছে ১৩৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
বাজারে ৮ কোটি ১৫ লাখ ২৭ হাজার ৯০০টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে; যা টাকার অঙ্কে ৩৬৭ কোটি ৮৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৮৯ কোটি ৬৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা শেয়ার, বন্ড ও মিউচুয়াল ফান্ড। আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেছে। যা গত ২০ আগস্টের পরে সর্বনিম্ন লেনদেন। ওই দিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৩৪৪ কোটি টাকা।
ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল রয়েল টিউলিপ সি পার্ল শেয়ার। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল জেমিনি সি ফুডের শেয়ার। তৃতীয় অবস্থানে ছিল লাফার্জহোলসিমের শেয়ার।
এরপর যথাক্রমে রয়েছে ফুয়াং ফুড, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, এইচআর টেক্সটাইল, সোনালী আঁশ এবং প্রভাতি ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের শেয়ার।
অন্যদিকে, সিএসইর প্রধান সূচক ৫৪ দশমিক ২৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪৭৭ পয়েন্টে। সিএসইতে ১০৯টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৮টির, কমেছে ৭৮টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩টির।
দিন শেষে সিএসইতে ১৫ কোটি ৪০ লাখ ৬০ হাজার ১৯৮ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১০ কোটি ৬১ লাখ ৯৯ হাজার ১৯৫ টাকার শেয়ার।
এমআই/এসএম