‘আমদানি করলে একটি ডিম হবে ২০ টাকা’
ডিম আমদানি করা হলে দেশের পোল্ট্রি খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছেন ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সহ-সভাপতি আনোয়ারুল হক।
তিনি বলেন, বর্তমান সংকট দূর করতে গিয়ে ডিম আমদানি করা হলে প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতির মুখে পড়বে। তারা খামার বন্ধ করে দেবে, দেশীয় উৎপাদন কমে যাবে। এর ফলে ভোক্তাদের একটি ডিম ২০ টাকায় কিনতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এবং বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএবি সহ-সভাপতি বলেন, বর্তমানে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ডিমের উৎপাদন খরচ নির্ধারণ করে দিয়েছে ১০ টাকা ৫০ পয়সা। তার সঙ্গে ৫ শতাংশ মুনাফায় বিক্রি করার নির্দেশনা দিয়েছে খামারিদের। সব মিলিয়ে ডিম ১২ টাকা বিক্রির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা সরকারের এই নির্দেশনা মানব। আমরা চাই- ভোক্তারা ১২ টাকায় ডিম পাক। বছরের পর বছর লাভ-লস দিয়ে ব্যবসায় টিকে আছি। আমরা যেন এই ব্যবসায় টিকে থাকতে পারি।
আরও পড়ুন- খামারিদের স্বার্থে আমদানি হচ্ছে না ডিম
কাজী ফার্মসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী জাহিদুল হাসান বলেন, গরমের কারণে মুরগি বেশি পানি খায়, খাদ্য খায় কম। এ কারণে ডিম উৎপাদন কমছে। অথচ আপনারা অভিযোগ করেছেন- করপোরেট ব্যবসায়ীরা ডিমের দাম বাড়াচ্ছে, এটা সত্য নয়। এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। করপোরেট ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে ডিমের দাম বাড়ায়নি।
১০ টাকার নিচে ডিম আসবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, ভারতে ডিমের দাম কম। কারণ, সেই দেশের খাদ্যের দাম কম। কিন্তু আমাদের দেশের মুরগির খাদ্যের দাম অনেক বেশি। ফলে ১০ টাকার নিচে ডিম খাওয়ার সুযোগ দেখছি না। ডিমের দাম কমাতে হলে ডলারের দাম ১০০ টাকার নিচে আনতে হবে। খাদ্যের দাম কমাতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, উৎপাদন খরচের বিপরীতে ন্যায্য দাম না পাওয়া, অপপ্রচার এবং বাজার তদারকি সংস্থার চাপের কারণে পোল্ট্রি খাতের প্রান্তিক খামারিরা আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এরই মধ্যে অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে, কমেছে উৎপাদন। এ অবস্থা চলতে থাকলে ডিম-মাংসের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে, দেখা দেবে পুষ্টি ঘাটতি।
তাই, প্রান্তিক খামারিদের সুরক্ষা এবং কম দামে সবার জন্য ডিম ও মুরগি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন এ খাতের উৎপাদক, ব্যবসায়ী ও খাত সংশ্লিষ্টরা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সহ-সভাপতি মো. তৌহিদ হোসেন, বাংলাদেশ অ্যাগ্রো ফিড ইনগ্রিডিয়েন্টস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি সুধীর চৌধুরী, ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম প্রমুখ।
এমআই/এমজে