মানের কারণে রফতানি বাজার হারাচ্ছে দেশের চামড়া
‘শুধুমাত্র মানসম্মত না হওয়ায় রফতানি বাজারে দেশীয় চামড়ার কাঙ্ক্ষিত দাম মিলছে না, বিভিন্ন ব্র্যান্ডগুলোও দেশীয় চামড়া নিতে চায় না’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম।
এ জন্য মানসম্মত চামড়া উৎপাদনে জোর দিতে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। রোববার (২৮ মার্চ) এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ আহ্বান জানান তিনি।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ট্যানারি শিল্প আমাদের দেশে আছে। ব্যাংক থেকে শুরু করে সরকার ও এনবিআরের সাপোর্ট (সহায়তা) বিদ্যমান রয়েছে। এমনকি সীমান্ত বন্ধ রেখেও আমরা ট্যানারি শিল্পকে সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। যাতে সস্তায় মানসম্মত চামড়া সরবরাহ হয়। হাজারীবাগের পরিবেশ বিবেচনায় আন্তর্জাতিক যেকোনো প্যারামিটারের বাইরে গিয়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাত হতো। এরপর যখন সাভারে ট্যানারি স্থানান্তর করা হলো, আপনারা (ট্যানারি মালিকরা) যাবেন না বলে অনেকদিন বিরত ছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘আপনাদের অনেকটা জোর করে নিয়ে যেতে হলো। সেখানে গিয়েও আপনারা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নিজেদের উন্নতি করতে পারেননি। আপনাদের ভেবে দেখা দরকার, আসলে কী দরকার ডিউটি সাপোর্ট নাকি নিজেদের উন্নয়ন?’
‘রফতানি বাজারে দেশীয় চামড়ার কাঙ্ক্ষিত মূল্য মিলছে না’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা যে চামড়া উৎপাদন করেন তা বিদেশে কম দাম পান। এমনকি দেশীয় ব্র্যান্ডগুলোও আপনাদের চামড়া নিতে চায় না। কারণ আপনাদের সবচেয়ে উন্নত মানের চামড়া দিয়ে মানসম্মত পণ্য উৎপাদন করা যায় না বলে অভিযোগ শুনতে পাই। শুধুমাত্র মানের কারণে বিদেশ থেকে চামড়া আমদানি করতে হয়। আপনাদের মানসম্মত চামড়া উৎপাদনে মনোযোগী হওয়া দরকার। কমপক্ষে দেশীয় চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবেন- এমন চামড়া প্রস্তুত করুন। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। অন্যান্য সকল সাপোর্ট দিয়ে যাব।’
বর্তমানে সাভারে ১৫৫টি ট্যানারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এর মধ্যে ৩০টি নন-বন্ডেড প্রতিষ্ঠান। আজকের সভায় ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে প্রায় অর্ধশত কেমিকেলের ওপর শুল্ক ও ভ্যাট হ্রাসের প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। এছাড়া চামড়ার মৌসুমে লবণ আমদানিতে শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব দেন।
সভায় এনবিআরের আয়কর নীতির সদস্য মো. আলমগীর হোসেন, সদস্য সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, ভ্যাট নীতির সদস্য মো. মাসুদ সাদিকসহ বাজেট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরএম/এফআর