ডলার সংকটেও নতুন গাড়ি আমদানি করছেন ব্যাংক মালিকরা
দেশে ডলার সংকটের কারণে এলসি খোলা যাচ্ছে না। গত ৬ মাসে পুরান গাড়ির আমদানি তিন-চতুর্থাংশ কমে গেছে। কিন্তু নতুন গাড়ির ব্যবসায়ীরা যারা-ব্যাংক মালিক তারা ঠিকই আমদানি করছেন এবং ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মঙ্গলবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট-পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন পুরান গাড়ির আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা) এর সভাপতি মো. হাবিব উল্লাহ ডন।
বারভিডার সভাপতি বলেন, ‘ডলার-সংকটের কারণে ব্যবসা কিছুটা কমলেও আমরা সহ্য করে নিচ্ছি। কারণ সরকার আমাদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছে যে দেশের এই সংকটে আমদানি একেবারে বন্ধ না করলেও লাগাম টানতে হবে। তবে রিকন্ডিশন গাড়ি কম এলেও নতুন গাড়ির ব্যবসায়ীরা আমদানি করছেন। বিশেষ করে ব্যাংক মালিকরা, যারা গাড়ির ব্যবসা করেন, তারা ডলার পাচ্ছেন এবং ব্যবসা চালিয়ে নিচ্ছেন।’
বারভিডার পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্বাভাবিক সময়ে বাংলাদেশে প্রতি মাসে গড়ে ২ হাজারের মতো গাড়ি আমদানি হয়। ফলে গত ৬ মাসে ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার গাড়ি আমদানি হওয়ার কথা থাকলেও এসেছে তার চার ভাগের একভাগ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজেটে বারভিডার দাবিগুলো অনেকাংশে প্রতিফলিত হয়নি। সরকারের নীতি গ্রহণের সময় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলে সবার জন্য সুবিধা হয়। এছাড়া বিভিন্ন ক্যাটাগরির গাড়িতে শুল্ক-কর পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব তুলে ধরেন সংগঠনটির নেতারা।
বারভিডা সভাপতি বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় তারা বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য বিভিন্ন ধরনের গাড়ির শুল্ক-কর পুনর্বিন্যাসের সুপারিশ তুলে ধরেছিলেন। হাইব্রিড প্রযুক্তির মোটরগাড়িতে সিসিভিত্তিক শুল্ক-করের হার বিদ্যমান। তবে উৎপাদক ও ব্যবহারকারী অন্য দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে সিসি স্ল্যাবের সংস্কার ও পরিবর্তন দরকার।
বারভিডা সভাপতি আরও বলেন, ‘আমরা বাজেট প্রস্তাবে জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হাইব্রিড গাড়ির সিসি স্ল্যাব ও সম্পূরক শুল্কহার পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব করেছিলাম, যাতে এসব গাড়ি আমদানি সহজলভ্য হয় এবং দেশের ভোক্তাশ্রেণি উপকৃত হয়। পাশাপাশি এতে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেত।’
কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে হাইব্রিড গাড়ি (১৮০১ সিসি থেকে ৪০০০ সিসি পর্যন্ত) আমদানিতে শুল্ক হ্রাস না করায় তাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বলে উল্লেখ করেন হাবিব উল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাব গ্রহণ করে তা বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।’
হাবিব উল্লাহ আরও বলেন, ‘ফসিল ফুয়েলচালিত গাড়ির সিসি স্ল্যাব ও সম্পূরক শুল্কহার পুনর্বিন্যাস এবং জ্বালানির প্রাপ্যতা ও বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের সময়ে দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির আমদানি ও ব্যবহার বৃদ্ধি বড় রকমের স্বস্তি দিতে পারে। আমরা তাই বৈদ্যুতিক গাড়ির বিদ্যমান ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছিলাম। সেটা আবার বিবেচনা করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
একই সঙ্গে মাইক্রোবাসকে গণপরিবহন হিসেবে উল্লেখ করে এর ওপর থেকে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানায় সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে বারভিডার সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি আবদুল হক, সাবেক সহ সভাপতি আনিসুজ্জামান পিনু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এসআই/এসকেডি