উদ্যোক্তা-গৃহিণী-কর্মজীবী সকল নারীর এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গী ‘বিকাশ’
খুলনা ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে (কেইউইটি) পড়েন শিক্ষার্থী নাফিসা হোসেন। নাফিসার বাবা-মা থাকেন ঢাকায়। খুলনায় মেয়ের প্রতি মাসের খরচ, ইউনিভার্সিটির ফির জন্য টাকা প্রয়োজন হয়। যখনই কোনো টাকা প্রয়োজন হয় তখনই বাবাকে ফোন করেন নাফিসা। বাবা চট করেই বিকাশে টাকা পাঠিয়ে দেন।
নাফিসার টিউশন ফির মতো, কারো সংসারের কেনাকাটা, কারো ঈদ শপিং, ব্যবসায়িক লেনদেন সবই সহজ করে দিয়েছে বিকাশ লেনদেন। পাশাপাশি ঘরে বসে ইউটিলিটি বিল, অনলাইন কেনাকাটার পেমেন্ট, মোবাইল রিচার্জ, বাস ট্রেনের টিকিট কেনা, বিভিন্ন কার্ডের বিল, বেতন পরিশোধসহ সব লেনদেনে তরুণী গৃহিণী নারী উদ্যোক্তাদের ডিজিটাল লাইফস্টাইলে সঙ্গী হিসেবে কাজ করছে ‘বিকাশ’।
সবসময় বিকাশ ব্যবহারে অভ্যস্ত নাফিসা বলেন, এখন কেনাকাটা করতে গেলে আগে খুঁজি বিকাশ পেমেন্টের ব্যবস্থা আছে কিনা? থাকলেই কেনায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। কারণ বিকাশে সহজে পেমেন্ট করা যায় আবার অনেক জায়গায় বেনিফিটও পাওয়া যায়। সম্পত্তি বাসের টিকিট কাটতে হবে সেটাও আমি অনলাইনে বিকাশের কেটেছি, পেমেন্ট দিয়েছি বিকাশে। কোন বন্ধুর টাকা প্রয়োজন বা আমার টাকা দরকার, মোবাইল রিচার্জ সব ক্ষেত্রেই বিকাশ ব্যবহার করছি। এতে সময় বেচে যাচ্ছে, লেনদেনও সহজ করে দিয়েছে বিকাশ।
ব্র্যান্ড ও পণ্যভেদে থাকছে বিশেষ মূল্য ছাড়, এর সঙ্গে দিচ্ছে আকর্ষণীয় সব অফার। ফলে উৎসবে পরিবারের কেনাকাটায় স্বাচ্ছন্দ্যময় ও বাড়তি আনন্দ যোগ করে দিচ্ছে ‘বিকাশ’।
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের শিক্ষক নাজনীন হক বাঁধন বলেন, আমি ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস নিচ্ছি কিন্তু আমার কোন কেনাকাটার পার্সেল বাসায় যাচ্ছে আমি পেমেন্ট করে দিচ্ছি বিকাশে, তারা পণ্য দিয়ে যাচ্ছে। আর এখন সাক্ষাতে গিয়ে সময় নষ্ট করে লেনদেন করতে হচ্ছে না, একটা বিকাশ নাম্বার থাকলেই হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমি যেহেতু কর্মজীবী তাই অফিস চলাকালে ব্যাংকে গিয়ে ইউটিলিটি বিল দিতে পারি না। এই কঠিন কাজটা সহজেই আমি করছি বিকাশের মাধ্যমে। এছাড়া বাসার ইন্টারনেট ও ডিস বিলসহ বিভিন্ন সেবার মূল্য বেশিরভাগ সময় দিনের বেলা নিতে আসেন যখন আমাদের মত যারা কর্মজীবী তারা বাসায় থাকি না। এসব সেবার বিলও পরিশোধ করা হচ্ছে বিকাশে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বলেন, আমি সোশ্যাল সায়েন্স নিয়ে পড়াই। ছাত্রছাত্রীদের কাছে যখন গ্রামীণ অর্থনীতির প্রসঙ্গ আসে; তখন উদাহরণ হিসেবে বলি আজকে গ্রাম-শহরের দূরত্ব কতটা কমে গেছে। এখন মুহূর্তে লেনদেন করতে পারছে বিকাশের মাধ্যমে। মোবাইল ফাইন্যান্স মানুষের জীবন কতটা সহজ করে দিয়েছে। এখন আর টাকার জন্য গ্রামের পরিবারকে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয় না, শুধু একটা বিকাশ নাম্বার থাকলেই চলে।
নারী উদ্যোক্তা ফারহানা সাথী
ফারহানা সাথী একজন মা ও নারী উদ্যোক্তা। ‘আরুশের মা’ নামের একটি ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন তিনি।
বিকাশ সন্তান লালন-পালনের সঙ্গে ব্যবসা চালানোর সুযোগ করে দিয়েছে বলে জানিয়ে ফারহানা বলেন, আমি একজন মা আবার নারী উদ্যোক্তা। আমার বেশি মুভমেন্ট করার সুযোগ নেই। এমন পরিস্থিতিতে পণ্য কেনাকাটা, কারিগরের বিল, বিভিন্ন পেমেন্ট মুহূর্তের মধ্যে করার সুযোগ থাকায় ব্যবসা করা সহজ হয়ে গিয়েছে।
নারী উদ্যোক্তা ফারহানা সাথী বলেন, আমি আরুশের মা নামের প্রতিষ্ঠান চালায়। এখানে ক্রেতারা আসেন দেখা যায় পণ্য পছন্দ হলে বিকাশ পেমেন্টে করে পণ্যটা নিয়ে নিলো। আবার অনেক সময় দেখা যায়- যে পোশাকটি পছন্দ হয়েছে ওই পরিমাণ নগদ টাকা ক্রেতার কাছে নেই। তখন দেখা যাচ্ছে বিকাশ থেকে পেমেন্ট করে দিচ্ছে। এতে করে আমার বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে। এভাবেই বিকাশ আমার ব্যবসা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
এই নারী উদ্যোক্তা জানান, আমার কারখানায় যেসব লোক কাজ করছে তাদের অর্ডারের বিলগুলো আমি সাপ্তাহিক হিসাবে বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট করে দিচ্ছি। এর ফলে সরাসরি আমার যেতে হচ্ছে না। আবার যারা মাল (পণ্য) সরবরাহ করছে তাদেরকেও বিকাশে পেমেন্টে করে দিচ্ছি। ফলে এখন আর আমাকে কষ্ট করে ব্যাংকের লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা জমা দিতে হয় না। এতে করে সময় বেচে যাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, যশোরের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আমি কিছু পণ্য সংগ্রহ করে থাকি। হস্তশিল্প ও বিভিন্ন পোশাকগুলো নারীরা তৈরি করেন। তারা শুধু নারী নয়, প্রত্যেকে একেকজন ‘মা’। আর্থিক স্বচ্ছলতার জন্য কাজ করেন। কেউ ওই অর্থ দিয়েই সংসার চালান। প্রত্যন্ত অঞ্চলের যেসব নারীদের কাছ থেকে পণ্য সংগ্রহ করি তাদের কাছে ব্যাংকের লেনদেন খুব সহজলভ্য নয়। তারা অল্প টাকার কাজ করেন যা ব্যাংকে দেওয়া সম্ভবও নয়। এমন অবস্থায় আমি যখন তাদের কাছে পণ্যটা নিয়ে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাচ্ছি। দেখা যাচ্ছে তারা ঘরে বসে পণ্য তৈরি করে পাঠিয়ে দিচ্ছে। আমিও ঘরে বসেই তাদের পণ্য পেয়ে যাচ্ছি আর বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট করে দিচ্ছি।
এখন আমার কর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী, ব্যবসায়ীক সহযোগী সবাই বিকাশ ব্যবহার করে জানিয়ে এই উদ্যোক্তা বলেন, প্রথমে অনেকেরই বিকাশ ছিল না। কিন্তু যখন দেখলো তাদের আর্থিক সুবিধা হচ্ছে। টাকা পেমেন্ট করা সহজ হচ্ছে তখন তারা সবাই বিকাশে হিসাব খুলেছে। এখন আমার সঙ্গে যাদের ব্যবসা, কারিগর থেকে পণ্য সরবরাহকারী প্রত্যন্ত অঞ্চলের মহিলা কর্মী সবারই বিকাশে হিসাব আছে। পেমেন্টে কোনো সমস্যা হয় না।
গৃহিণী সিরাজুম মুনিয়া
গৃহিণী সিরাজুম মুনিয়ার সংসারের বড় সঙ্গী বিকাশ। দিনের শুরু থেকে শেষ খরচাপাতির বেশিরভাগই হয় বিকাশ পেমেন্টে। স্বপ্ন বা আগোরাসহ বিভিন্ন সুপার শপে বাজার করে পেমেন্ট করেন বিকাশে।
সিরাজুম মুনিয়া বলেন, বাসায় যে খালা (গৃহকর্মী) আছেন তার বেতনও বিকাশে দেই। খালা বেতনের টাকা গ্রামে পাঠান তার ছেলে মেয়ের জন্য। বিকাশে দিলে তার সুবিধা হয়।
কেনাকাটাকে আরও প্রাণবন্ত করা বিকাশের বিষয়ে এই গৃহিণী বলেন, আমি সব ধরনের শপিং করছি বিকাশ পেমেন্টে। কারণ বিকাশে পেমেন্ট করলে একটু লাভ পাওয়া যায়। ঈদে বাচ্চার জামা-জুতা বাবা মায়ের জন্য শাড়ি-পাঞ্জাবী, নিজের জন্য পোশাক কিনবো। কেনাকাটার আগে দেখবো কোন ব্র্যান্ডে ও প্রতিষ্ঠানে বিকাশে ছাড় আছে; ওই জায়গা থেকেই পণ্য কিনবো। যেমন গত সপ্তাহে আর্টিসান থেকে পোশাক কিনেছি ছাড় পেয়েছি এটাই বিকাশের সুবিধা। এছাড়া বিকাশের সবচেয়ে বড় সুবিধা ক্যাশলেস লেনদেন। বাজারে যাবো, শপিং করবো, কোথাও ঘুরতে যাচ্ছি, ব্যাগ ভর্তি নগদ টাকা নেয়ার ঝামেলা নেই। বিকাশ থাকলেই সব সমাধান।
বিকাশে অ্যাড মানিতেও লাভ জানিয়ে এই গৃহিণী বলেন, আমার বিকাশে টাকা শেষ। ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে অ্যাডমানি করবো, এখানেও লাভ, বিভিন্ন অঙ্কের ক্যাশব্যাক পাচ্ছি। আর বিভিন্ন ধরনের বিল পরিশোধ তো একবারেই সহজ। মোবাইল রিচার্জ করা যাচ্ছে মুহূর্তে। নেট শেষ তারপরও রিচার্জ করা যাচ্ছে। আমার স্বামী, বাবা, ভাই-বোন সবাই বিকাশ ব্যবহার করে। পরিবারের প্রায় সিংহভাগ লেনদেনই ক্যাশলেস অর্থাৎ বিকাশে। যখন প্রয়োজন তখনই লেনদেন হচ্ছে বিকাশে।
বিকাশ:
প্রতিদিন সারাদেশে নোবেলের মত কোটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অংশ এখন বিকাশ। সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদের কেনাকাটাকে আরো সাশ্রয়ী আর রঙিন করে তুলতে প্রতি বছরের মতো এবারও অফার নিয়ে এসেছে বিকাশ। এখন কোটি মানুষের কাছে ঈদের কেনাকাটা মানেই বিকাশ পেমেন্টে কেনাকাটা। বড় বড় মার্কেটগুলোর পাশাপাশি এখন অলিগলির ছোট মুদি দোকানগুলোতেও বিকাশ পেমেন্টের সুযোগ রয়েছে, অনলাইন কেনাকাটা তো আছেই। সারাদেশে প্রায় ৫,৫০,০০০ মার্চেন্ট রয়েছে বিকাশের। এবারের ঈদ কেনাকাটায় বিকাশ পেমেন্ট করে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ৩০০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক ও ডিসকাউন্ট কুপন পেতে পারেন। আর রমজানের ইফতার-সেহরিতে আছে ১০০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক।
এসআই/এমজে