বৃহত্তর স্বার্থে এনবিআর ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় জরুরি
বৃহত্তর স্বার্থে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় আরও বৃদ্ধি করা জরুরি। এনবিআরের মনোভাবে পরিবর্তন আনতে হবে। জিপিডিতে করের অবদান বাড়াতে ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতকরণে আরও মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।
বুধবার (২২ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), দৈনিক সমকাল ও চ্যানেল২৪ আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় বক্তারা এসব পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে এনবিআরের ঊর্ধ্বতনদের কেউ নেই। দেশের অর্থনীতির বৃহত্তর স্বার্থে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় আরও বৃদ্ধি করা জরুরি। এখানে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান আছেন, তিনি এফবিসিসিআইয়ে যেতেন, আলোচনা করতেন। এনবিআরকে বিজনেস কমিউনিটিকে শুনতে হবে।
তিনি বলেন, আলোচনার মাধ্যমে কমন গ্রাউন্ড খুঁজবে যেটা দেশের স্বার্থে হওয়া উচিত। কেউ কেউ প্রধানমন্ত্রীর সান্নিধ্যে এসে গরম হয়ে যান। আমাদের এই মন মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী দেশ সেবার জন্য দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করছেন। সেখানে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করার প্রয়োজন। এনবিআরের মনোভাবে পরিবর্তন আনতে হবে।
মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, জিপিডিতে করের অবদান বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই, এ লক্ষ্যে ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতকরণে আরও মনোযোগী হতে হবে। এছাড়াও অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে দ্রুততম সময়ে সকল সেবা চালু করতে হবে।
অন্যদিকে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বাজেট প্রণয়নে বৈশ্বিক পরিস্থিতি, এলডিসি উত্তরণ, স্থানীয় অবকাঠামোর উন্নয়ন, রপ্তানি বহুমুখীকরণ প্রভৃতি বিষয়গুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের বেসরকারি খাতের সক্ষমতা প্রতিনিয়ত হ্রাস পাচ্ছে এবং বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে, কারণ এর সঙ্গে উদ্যোক্তারা সক্ষমতা হারালে সার্বিক অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
দেশে ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ উন্নয়নে তিনি লাল ফিতার দৌরাত্ম কমানোর উপর জোরারোপ করেন। পাশাপাশি ব্যাকওয়ার্ড লিংকে শিল্পের উন্নয়নে সহায়ক নীতিমালা প্রণয়নের প্রস্তাব করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ বলেন, সম্প্রতি সময়ে গ্যাস, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি আমাদের বেসরকারি-খাতকে বেশ প্রতিযোগিতার মুখোমুখি করেছে, এমতাবস্থায় আন্তর্জাতিক বাজার জ্বালানির মূল্য হ্রাস পেলে স্থানীয়ভাবে তা সমন্বয় করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আমাদের মজুতকৃত গ্যাস দিয়ে আগামী ৫ বছর স্থানীয় চাহিদা মেটানো সম্ভব, তাই শিল্পখাতে জ্বালানি সক্ষমতা নিশ্চিতকরণের কোনো বিকল্প নেই।
সেই সঙ্গে ব্যাংকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পের উন্নয়ন এবং ম্যান-মেইড ফাইবার-এর ব্যবহার বাড়ানোরও প্রস্তাব করেন এ কে আজাদ।
নির্ধারিত বিষয়ের ওপর আলোচনায় প্রাণ গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, সামগ্রিক কর ব্যবস্থা সহজ করতে হবে। যৌক্তিক করতে হবে। নতুন কোনো কর আরোপ না করে উদারভাবে চিন্তা করতে হবে। রপ্তানি বহুমুখীকরণ করতে হবে। সব রপ্তানি খাতকে বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধা দিতে হবে।
ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার সামীর সাত্তারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান, আনোয়ার গ্রুপের এমডি হোসেন খালেদ, ইউনিলিভার বাংলাদেশের সিইও জাভেদ আখতার, সানেমের নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. সেলিম রায়হান, সিটি ব্যাংকের সিইও মাশরুর আরেফিন, বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, বিজিএমইএর পরিচালক আসিফ আশরাফ, আব্দুল মোনেম লিমিটেডের এমডি মাইনুদ্দিন মোনেম, নোকিয়ার কান্ট্রি হেড আরিফুল ইসলাম ও আইসিএবির সাবেক সভাপতি হুমায়ুন কবির আলোচনায় অংশ নেন।
আরএম/এসকেডি