নিষিদ্ধ পল্লীর মেয়েদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে বিদ্যানন্দের উদ্যোগ
পতিতাবৃত্তির পেশা থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান অনেকেই। কিন্তু কয়জন পারে শুদ্ধ পথে ফিরতে? পতিতা শুনলেই বিদ্রুপের হাসি। মানুষজন শুদ্ধ পথের কথা বলে কিন্তু ফেরার পথ দেখায় না। সব ভুলের তো মাপ হয়, তাহলে তাদের ভুলের কেন সংশোধন হয় না?
সমাজের এমন ট্যাবু নিয়ে কেউ উত্তর খোঁজে না। কিন্তু কাউকে কাউকে চিন্তার পাশাপাশি উদ্যোগ নিতে দেখা যায় রাতারাতি। তেমনই একটি উদ্যোগ নিয়েছে সম্প্রতি একুশে পদকপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।
এবারের চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্টলে বিক্রয়কর্মী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন দুইজন যৌনকর্মী। বাণিজ্য মেলার মতো জায়গায় বিদ্যানন্দের স্টলে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ পেয়ে অবাক বিস্ময় জাগে তাদের মনেও। প্রথম প্রথম মিথ্যা মনে হলেও দুয়েকদিন কাজ করে তাদের সেই ভুল ভাঙে। এখন বাকিদের মতো তারা পণ্যের বিজ্ঞাপণ করে যাচ্ছে মেলায় আসা দর্শনার্থীদের সামনে।
বিদ্যানন্দের জনসংযোগ প্রধান সালমান খান ইয়াছিন বলেন, বিক্রি কম হতে পারে। কেউ কেউ বিদ্রুপ করবে। তারা অনভিজ্ঞ। বিক্রি কম হবে জেনেও আমরা তাদের চাকরিতে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। বিকল্প আয়ের পথ পেলে তারাও অন্ধকার জগৎ থেকে ফিরে আসবে। আমরা শুধু বলে নয়, কাজের মাধ্যমে সেটা করে দেখাতে চেয়েছি। বাণিজ্য মেলায় লাভের আশায় আসিনি। অন্তত এই সমাজের কিছু ট্যাবু ভেঙে যেতে চাই। স্বাভাবিক জীবনের প্রতিশ্রুতি দেখাতে চাই সবাইকে। সব প্রতিষ্ঠান যদি অসহায় হিসেবে বিবেচনা করে তাদের একটু কাজের সুযোগ করে দেয়, তাহলে অনেক মেয়ে আলোর মুখ দেখবে। ফিরে আসতে পারবে স্বাভাবিক জীবনে।
বাণিজ্য মেলার ১ নম্বর স্টলটির পণ্যেও আছে বিদ্যানন্দের চমক। পাহাড় কিংবা চরাঞ্চল, উত্তর কিংবা দক্ষিণাঞ্চল। বিদ্যানন্দ সংগ্রহ করে এনেছে দেশের প্রত্যন্ত এলাকার বিলুপ্তপ্রায় শিল্প। এমন পণ্যগুলোর স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে চাহিদা থাকলেও শুধুমাত্র প্রদর্শনীর অভাবে মূল্য পায় না। ফলে প্রত্যন্ত এলাকার এসব শিল্প আস্তে আস্তে বিলুপ্ত হয়ে যায়। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন সেসব পণ্যগুলোর প্রদর্শনী নিয়ে এসেছে বাণিজ্য মেলায়। আর তার লাভের অংশ সরাসরি ব্যয় করা হচ্ছে প্রত্যন্ত এলাকার জনসাধারণের জীবনমান উন্নয়নে।
কেএ