৩৪ ব্যাংকের মধ্যে ক্রেতাহীন ২৮ ব্যাংক
এবার পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা ব্যাংক খাতের শেয়ারেও প্রভাব পড়েছে। ক্রেতাহীন অবস্থায় রয়েছে অনেক ব্যাংকের শেয়ার।
রোববার (১২ মার্চ) পুঁজিবাজারে এমন দৃশ্য দেখা যায়। এদিন সকাল ১১ টা পর্যন্ত ব্যাংক খাতের ৩৪টি শেয়ারের মধ্যে ক্রেতাহীন ছিল ২৮টি ব্যাংকের শেয়ার।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্যমতে, রোববার (১২মার্চ) দিনের শুরুতে উত্থানে থাকা ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের শেয়ারের দাম কমতে শুরু করেছে। দিনের শুরুতে লেনদেন হয় ৩৩ টাকা ৬০ পয়সাতে। কিন্তু লেনদেনের মাত্র ৩০ মিনিট পর থেকে (অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টার পর) দাম কমতে শুরু করে। শেয়ার প্রতি ৩০ পয়সা কমে ১১টা পর্যন্ত লেনদেন হয় ৩৩ টাকা ৩০ পয়সায়।
একইভাবে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের শেয়ার আগের দিনের চেয়ে ১০ পয়সা কমে ১৩ টাকা ৮০ পয়সাতে লেনদেন হয়েছে। প্রিমিয়ার ব্যাংকের শেয়ার ১০ পয়সা কমে ২০ টাকা ১০ পয়সাতে লেনদেন হয়েছে। বাকি ২৯টি ব্যাংকের শেয়ারের দাম ফ্লোর প্রাইসের কারণে কমেনি। তবে ইতিবাচক ধারায় লেনদেন হয়েছে ব্যাংক এশিয়া, ওয়ান ব্যাংক ও যমুনা ব্যাংক লিমিটেডের শেয়ার।
আরও পড়ুন- ৪৮ ঘণ্টায় বন্ধ মার্কিন ব্যাংক, দেশীয় ব্যাংকগুলোর জন্য সতর্কবার্তা
এই তিন ব্যাংকের শেয়ারের মধ্যে ব্যাংক এশিয়ার শেয়ার আগের দিনের চেয়ে ৪০ পয়সা বেড়ে ২০ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। যমুনা ব্যাংকের শেয়ার ১০ পয়সা বেড়ে লেনদেন হয়েছে ২১ টাকা ৪০ পয়সাতে। এছাড়া ১০ পয়সা বেড়ে ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১ টাকা ১০ পয়সায়।
বিক্রেতা থাকলেও ক্রেতাহীন হয়ে পড়া ব্যাংকগুলো হচ্ছে- এবি ব্যাংক, আল আরাফাহ ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিটিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, রুপালি ব্যাংক, সাউথ বাংলা ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ইউসিবি, ইউনিয়ন এবং উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড।
আইপিডিসির বিনিয়োগকারী আশিকুর ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঋণ খেলাপি ও লোপাটের কারণে এমনিতেই ব্যাংক খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা নেই। শেয়ারহোল্ডাররা আগে থেকে আরও বেশি সতর্ক হয়েছে। ফলে তারা ব্যাংকের শেয়ার কিনছে না।
লংকা বাংলা সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী নওসিন আল-বারাকাত ঢাকা পোস্টকে বলেন, খারাপ ব্যাংকগুলোকে বিশেষ প্রণোদনা দিয়ে চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ বুঝতেই পারছে ব্যাংকগুলোর অবস্থা কেমন, এ কারণে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন ঢাকা পোস্টকে বলেন,
যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের (এসভিবি) এই ঘটনায় বিনিয়োগকারীদের মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব পড়েছে।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ছায়েদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিভিন্ন কারণে ব্যাংক খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কম। তার ওপর নতুন করে এখন এসভিবি বন্ধের ঘটনায় ব্যাংক খাতে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এমআই/এমজে