৪ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় সুতা আমদানিতে বিশেষ সুবিধায় পোশাক শিল্প
এখন থেকে শতভাগ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে পার্শিয়াল শিপমেন্টে (আংশিক চালান) ভারত থেকে সুতা আমদানি করতে পারবে।
এর আগে একটি আংশিক চালানে শুধুমাত্র চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে আমদানি করার অনুমোদন ছিল। এর বাইরে অন্যান্য বন্দর থেকে সুতা আমদানিতে এক বা একাধিক শিপমেন্টের ক্ষেত্রে সুতা আমদানির অনুমতি ছিল। দীর্ঘদিন ধরে পোশাক ও টেরি তোয়ালে রপ্তানিকারকরা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সব স্থলবন্দর দিয়ে তুলা, সুতা ও কাপড়সহ কাঁচামাল আমদানির দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
আরও পড়ুন>>আরও পড়ুন>>১৩ মাস পর পোশাক রপ্তানিতে ভাটা
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ জানুয়ারি সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের কাস্টমস, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও চুক্তি বিভাগের দ্বিতীয় সচিব ওমর মবিন সই করা আদেশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ওই আদেশে বলা হয়, বৈধ বন্ডেড ওয়্যারহাউজ লাইসেন্সধারী রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে শর্তসাপেক্ষে এই সুবিধা ভোগ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাদের ব্যাক-টু-ব্যাক লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) এর মাধ্যমে সুতা আমদানি করতে হবে এবং কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট অফিসের জারি করা বার্ষিক আমদানি এনটাইটেলমেন্ট অনুসরণ করতে হবে।
অন্যান্য শর্তের মধ্যে রয়েছে- বন্ড কমিশনারেট থেকে প্রাপ্ত বৈধ বন্ড লাইসেন্সের বিপরীতে লাইসেন্সের মেয়াদ থাকা সাপেক্ষে সুতা আমদানিযোগ্য হবে, বন্ড কমিশনারেট কর্তৃক নির্ধারিত বার্ষিক আমদানি প্রাপ্যতার ভিত্তিতে আমদানি করা, পণ্যের শুল্কায়নকালে ওজন নিশ্চিত করা, দৈবচয়নের ভিত্তিতে পণ্যের কায়িক পরীক্ষা সম্পন্ন করা, ইউডি'র বিপরীতে আমদানি সমন্বয়যোগ্য করা।
আরও পড়ুন>>সংকটময় পরিস্থিতিতেও পোশাক শিল্প এগিয়ে যাচ্ছে
এছাড়া রপ্তানিকারককে খালাসোত্তর আমদানি তথ্য বেনাপোল কাস্টম হাউসকে একটি নির্দিষ্ট ছকে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেট এবং ব্যাংককে তাৎক্ষণিকভাবে ইমেইলে জানাতে হবে।
বন্ড কমিশনারেট থেকে প্রাপ্ত তথ্যসমূহের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট বন্ডারের বন্ডেড গুদামে পণ্য ইন বন্ড কার্যক্রম সম্পাদিত হয়েছে কিনা এবং পাস বইয়ে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে কিনা ইত্যাদি বিষয় যাচাই করবে। আমদানি-রপ্তানি বিষয়ে কাস্টমহাউস, বেনাপোলের পাঠানো তথ্য এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক দলিলাদি যাচাই করবে। কোনো অনিয়ম ধরা পড়লে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আর এ বিষয়ে বন্ড কমিশনারেট প্রতি মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (কাস্টমস: রপ্তানি ও বন্ড শাখায়) প্রতিষ্ঠানভিত্তিক আমদানি-রপ্তানি তথ্য সম্বলিত একটি প্রতিবেদন পাঠাবে। প্রতিবেদনের সঙ্গে সফট কপিও পাঠাবে।
সুবিধা পাওয়ার পরপরই গত সোমবার বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) এক চিঠির মাধ্যমে তাদের সদস্যদের এই সুবিধার কথা জানিয়েছে।
বিজিএমইএ তার সদস্যদের দেওয়া চিঠিতে সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আপনাদের সকলের অবগতির জন্য অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা কাস্টমস স্টেশনের মাধ্যমে সুতা আমদানির ক্ষেত্রে পার্শিয়াল শিপমেন্টের (আংশিক চালান) জটিলতা নিরসন করে আদেশ জারি করেছে।
তিনি বলেন, সুতা আমদানি ও আংশিক চালানের জটিলতা নিরসনের জন্য বিজিএমইএ থেকে দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ জানিয়েছে। আদেশ জারির ফলে বেনাপোল ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা কাস্টম স্টেশনের মাধ্যমে সুতা আমদানি ও আংশিক চালানের জটিলতা পরিহার করে দ্রুততার সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সম্পাদন করা যাবে।
আরএম/এমএ