করনেট বাড়াতে বিশেষ পদক্ষেপ চায় আইএমএফ
রাজস্ব আদায় ও করনেট সম্প্রসারণে বিশেষ পদক্ষেপ চেয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ। পাশাপাশি কর ফাঁকি বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ ও রাজস্ব আদায়ের কৌশল সম্পর্কে জানতে চেয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি।
রোববার (৩০ অক্টোবর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কেন্দ্রে দ্বিপক্ষীয় এক বৈঠকে আইএমএফ এসব পরামর্শ দিয়েছে।
আইএমএফের এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে একটি দল সংস্থাটির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে এনবিআরের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটি চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম ও আয়কর, ভ্যাট ও শুল্কনীতির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয় এনবিআর চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেন।
তবে বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৈঠকে আইএমএফের পক্ষ থেকে কর হার বাড়ানো হবে কি না বা কারও কারও ক্ষেত্রে যে কর আদায়ের সুবিধা দেওয়া হয়েছে সেসব সুবিধা তুলে নেওয়া হবে কি না তা জানাতে চাওয়া হয়। যার জবাবে এনবিআর জানিয়েছে, বিদ্যমান মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে কর হার বাড়ানোর পক্ষপাতি নয়। এটা করলে করদাতাদের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি হবে। তাই সেটা না করে করদাতারা যাতে সহজে ও কনফিডেন্সের সঙ্গে কর দিতে পারে সেই পরিবেশ তৈরি করতে চায় এনবিআর। তাহলে স্বাভাবিকভাবেই কর আদায় বাড়বে।
এনবিআর সূত্রে আরও জানা যায়, নতুন করে যে করনেট বাড়ানো হচ্ছে এক্ষেত্রে মার্জিনাল ট্যাক্স পেয়ারদের কাছ থেকে বেশি পরিমাণ কর আদায় করা হবে কি না জানতে চায় আইএমএফ।
জবাবে রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে মুদ্রাস্ফীতির এ অবস্থা বিবেচনা করে প্রান্তিক কর প্রদানকারীদের ওপর করের হার বাড়ানো হবে না।
সেক্ষেত্রে আইএমএফের পক্ষ থেকে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির কৌশল জানতে চাওয়া হয়। এসময় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সেক্টরে যারা কর ফাঁকি দিচ্ছে, সেটা যথাসম্ভব কমিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে। এজন্য ইতোমধ্যেই অনেক পদক্ষেপও নিয়েছে এবং তার সফলতাও পেয়েছে। একই সঙ্গে করাদাতারা যাতে সহজে এবং কনফিডেন্সের সঙ্গে কর দিতে পারে সেই পরিবেশ তৈরি করবে এনবিআর।
রাজস্ব বোর্ড আরও জানিয়েছে, যারা ইতোমধ্যেই কর দিচ্ছে তারা যাতে ফাঁকি না দেয় সেজন্য এনবিআর কাজ করছে। এছাড়া সমাজে যাদের কর দেওয়ার সামর্থ্য আছে কিন্তু কর দেয় না, ওই জায়গাটা কমিয়ে আনার চেষ্টা করবে রাজস্ব বোর্ড। এরকম বিভিন্ন কৌশল অনুসরণ করে রাজস্ব বোর্ড তাদের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বাড়াতে চায়।
এসব কৌশলে রাজস্ব বোর্ড পরীক্ষামূলকভাবে কোনো সফলতা পাচ্ছে কি না, আইএমফের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হলে রাজস্ব বোর্ডর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে তারা যে পরিমাণ কর আদায় করতে পেরেছে, তাতে সবমিলিয়ে প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ। এজন্য এনবিআর মনে করছে তারা সঠিক পথেই আছে।
সভায় ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়ের জন্য এনবিআরের কোনো সহায়তা লাগবে কি না জানতে চেয়েছে আইএমএফ।
যার জবাবে এনবিআর কর্মকর্তারা জানিয়েছে, অবশ্যই তাদের সহায়তা হলে ভালো হয়, কারণ এটা একটা লার্নিং প্রসেস। এজন্য আন্তর্জাতিকভাবে কোলাবোরেশন এবং ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন ও ট্যাক্সের ডিসেন্ট্রালাইজেশন হলে তাদের জন্য উপকার হবে।
আরএম/এসএম