স্বাস্থ্য খাতের অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ে উদ্বিগ্ন এনবিআর
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু মো. রহমাতুল মুনিম বলেছেন, স্বাস্থ্য খাতে আমাদের সব সাপোর্ট ছিল। তবে অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন থাকি। সব সময় অসাধু ব্যবসায়ীরা ভালো সুযোগের অবৈধ সুবিধা নেয়। ব্যবসার জন্য তারা আইনগত রাস্তা তৈরি করে। সেজন্য আমরা চাইলেও অনেক কিছু দিতে পারি না।
বুধবার (৩ মার্চ) এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএমসিএ) প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ঢাকার বাইরে মফস্বল এলাকায় ভালো মানের হাসপাতাল করলে কর বেনিফিট দিতে পারি কিনা তা দেখব। আমরা চাই স্বাস্থ্যসেবা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ুক।
এক প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা নন-প্রফিট (অলাভজনক) অর্গানাইজেশন। অথচ ব্যাংক হিসাবে হিউজ অর্থ শো করে। এত অর্থ থাকলে তাকে আমরা নন-প্রফিট অর্গানাইজেশন বলব কিনা? আর যদি অ্যাকাউন্টে প্রফিট না থাকে তাহলে এমনিতেই কর আসবে না।
তিনি বলেন, মেডিকেল সার্ভিস নিয়ে আমি এখন তৃপ্ত ও খুশি। ছাত্রজীবনে ভীষণ পীড়া দিত। দেখতাম ডাক্তার টাকার জন্য রোগী দেখে না। রোগীরা চিকিৎসা পায় না। কিন্তু করোনার সময় ডাক্তাররা যে সেবা দিয়েছে সেটা একটা বড় পরিবর্তন। এতে আমি তৃপ্ত।
তবে প্রতিবেশী দেশে অনেক বেশি পরিমাণ রোগী যাচ্ছে। আপনাদের সার্ভিস উন্নত করেন। আমরা প্রতিবেশী দেশের ছাত্র পড়াই, তাহলে রোগী কেন প্রতিবেশী দেশে যাবে?
বাজেট প্রস্তাবে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) বলেছে, মানুষের জন্য কল্যাণকর আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে মানানসই কর্মপদ্ধতি দিয়ে মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা শিক্ষা নিশ্চিত করছে। তাই আসন্ন ২০২১-২২ অর্থ বছরে বাজেট বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর ওপর হতে আয়কর প্রত্যাহার করা বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো এদেশের শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা খাতে অলাভজনক এবং সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ২০১০ সালের আগ পর্যন্ত এ খাতে কোনো আয়কর আরোপ হয়নি। গত ২০১০ সালে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর ওপর ১৫ শতাংশ আয়কর ধার্য হয়েছে। বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোকে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে তা রহিত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
সংগঠনটির সভাপতি এমএ মবিন খান বলেন, করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রেখে সব রোগীদের সেবা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার পিপিই ও সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার সবচেয়ে বেশী হয়েছে। এ অবস্থায় বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো থেকে নিজস্ব উদ্যোগে আমদানির ক্ষেত্রে কাস্টমস ডিউটি, ভ্যাট, এআইটি ও এটিভিসহ মোট ৩৮.৪৭ শতাংশ কর আছে। এ ক্রান্তিকালে যা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ওই কর সম্পূর্ণ মওকুফ করার
প্রস্তাব করছি।
এছাড়া বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ব্যবহৃত সব প্রকার যন্ত্রপাতির শুল্কমুক্ত সুবিধার পাশাপাশি রোগ নির্ণয় কাজে ব্যবহৃত জীবনরক্ষাকারী যন্ত্রপাতি যেমন ব্লাড ব্যাংক, রেফ্রিজারেটর, পেমেন্ট মনিটর, অ্যানেসথেসিয়া ভেন্টিলেটর, ICU ভেন্টিলেটর আমদানির ক্ষেত্রে ভ্যাট ও ট্যাক্সে রেয়াত দেওয়ার জন্য সুপারিশ করে সংগঠনটি।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সব শিক্ষা উপকরণে কর অব্যাহতি দেওয়ার জন্য অ্যাসাসিয়েশন সুপারিশ করেছে।
সভায় এনবিআরের আয়কর, শুল্ক-ভ্যাট শাখার সদস্যসহ এনবিআর ও বিপিএমসিএ'র ঊর্ধ্বতনরা উপস্থিত ছিলেন।
আরএম/এসএম