বিমার প্রিমিয়াম কমাতে হবে : অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বিমা খাত হচ্ছে অর্থনীতির আয়না। এ খাতে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের সবাইকে বিমার আওতায় আনতে কোম্পানিগুলাকে প্রিমিয়াম কমাতে হবে। মানুষের সক্ষমতার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
সোমবার (১ মার্চ) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় বিমা দিবস’- এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিমা কোম্পানিগুলোর প্রতি এ আহ্বান জানান অর্থমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে দিবসটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, গত ১০ বছরে বিমা খাত অনেক এগিয়েছে। কিন্তু এ খাতে যে পরিমাণ সম্পদ ও সক্ষমতা রয়েছে, সেভাবে এগোতে পারেনি। বিমাপণ্য বাড়াতে হবে। স্বাস্থ্য খাতের পাশাপাশি যেসব খাতে এখনও বিমার কার্যক্রম শুরু হয়নি সেখানে কাজ করতে হবে। আমরা সরকারি সব সম্পদ বিমার আওতায় আনার চেষ্টা করছি।
‘উন্নত দেশের সব জীবন ও সম্পদের ইন্স্যুরেন্স হয়, আমাদের দেশে সেটা নেই’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের বিমা কোম্পানিগুলোর প্রিমিয়াম অনেক বেশি। প্রিমিয়াম কমাতে হবে। এজন্য নিজেরা বসে যৌক্তিক প্রিমিয়াম নির্ধারণ করবেন। যাতে আমরা সবাইকে জীবন বিমার আওতায় আনতে পারি।’
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বর্তমানে মেরিন ইন্স্যুরেন্স (নৌ-বিমা) ভালো অবস্থানে রয়েছে। তবে ফায়ার ইন্স্যুরেন্স (অগ্নি-বিমা) আরও গতিশীল করতে হবে। লাইফ ইন্স্যুরেন্সকে অনেক দূর নিয়ে যেতে হবে।
বর্তমানে বিমা কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন অনেক ভালো। আমরা আরও ভালো চাই। একটি বিমা কোম্পানি চাইলেই লস করতে পারে না। আমাদের প্রয়োজন তদারকি বাড়ানো— বলেন অর্থমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন বলেন, দেশে বর্তমানে ১২ লাখ বিমা পরিবার রয়েছে। এ খাতে আস্থা বাড়াতে আমরা কাজ করছি।
‘এ খাতের প্রথম ও প্রধান সমস্যা হচ্ছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) স্থায়ী জনবল নেই। বর্তমানে যারা কাজ করছেন তাদের স্থায়ী করে জনবল বৃদ্ধি করতে হবে।’ তৃতীয়পক্ষ বিমা আইন বাতিল করায় এখন বিমা ছাড়াই গাড়ি রাস্তায় চলছে। গাড়িগুলোকে বিমার আওতায় আনারও আহ্বান জানান তিনি।
স্বাগত বক্তব্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম বলেন, গত ১০ বছরে বিমা খাতের প্রিমিয়াম আয় বেড়েছে ১২৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। বিমাদাবি পরিশোধের হার বেড়েছে ৫৩ শতাংশ আর গ্রাহক বেড়েছে ৫১ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি নিয়ে ৫০ হাজার শিক্ষার্থীকে বিমা সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে চার শিক্ষার্থীর হাতে ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বিমা’র সনদ তুলে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা হচ্ছেন- আফিয়া ফাহমিদা প্রভাতি, রাইয়ান মোস্তফা রাহাত, ইশরাত জাহান ইকমা ও কাওছার হাসান ভূঁইয়া। শিক্ষার্থীদের হাতে অর্থমন্ত্রী বিমা সনদ তুলে দেন।
এর আগে বিমা খাতে বিশেষ অবদানের জন্য চার বিশিষ্ট ব্যক্তিকে সম্মাননা দেওয়া হয়। তারা হলেন- মরহুম নাজমুল হক সিদ্দিক, মরহুম আব্দুল মজিদ, মরহুম এম ময়ীদুল ইসলাম ও লুৎফর রহমান।
এমআই/এমএআর/