এক রেটে রেমিট্যান্স কিনতে চায় ব্যাংকগুলো
ডলার সংকট কাটাতে প্রবাসীদের আয় বা রেমিট্যান্স কেনার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো অনৈতিক প্রতিযোগিতা করছে। যে ব্যাংক বেশি দাম দিতে পারে তারাই রেমিট্যান্স পাচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানে রেমিট্যান্স কেনার ক্ষেত্রে এক রেট নির্ধারণের সুপারিশ করেছে ব্যাংকগুলো।
বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) বৈঠকে এ সুপারিশ করে ব্যাংকগুলো। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈঠক শেষে বাফেদার চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রায়ত্ব সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. আফজাল করিম বলেন, ডলারের দাম যাতে আর না বাড়ে আমরা সে ধরনের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছি। বাজার স্থিতিশীল করতে যে ধরনের উদ্যোগ নেওয়া দরকার তা নেওয়া হবে। এজন্য আরও সপ্তাহ খানেক সময়ের প্রয়োজন। শিগগিরই ডলার সংকট কেটে যাবে বলে তিনি জানান।
এবিবির চেয়ারম্যান সেলিম আরএফ হোসেন বলেন, ডলার মার্কেট নিয়ে আগামীতে কোন ধরনের নীতিমালা করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। শনি-রোববারের মধ্যে একটা সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স অনেকটাই পজিটিভ। পার্থক্যটা অনেকাংশে কমে এসেছে। ভবিষ্যতে এ ঘাটতি আরও কমে আসবে। সুতরাং ডলার সংকট খুব বেশিদিন থাকবে না বলেও আশা করছেন তিনি।
বৈঠক শেষে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাশরুর আরেফিন বলেন, ত্রিপক্ষীয় বৈঠক আরও ২-৩ দিন চলবে। বাস্তবে মার্কেটের অবস্থা কী তা বোঝার চেষ্টা করছি আমরা। যাচাই-বাছাই শেষে সিদ্ধান্ত জানা যাবে।
প্রসঙ্গত, ডলার বিক্রি করে অতিরিক্ত মুনাফা করায় কিছুদিন আগে ছয়টি ব্যাংকের কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছিল। নতুন করে আরও ছয়টি ব্যাংককে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কোনো কোনো ব্যাংক ডলার বিক্রিতে ৭৭০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করেছে বলে অভিযোগ আছে।
নতুন করে চিঠি পাঠানো ৬ ব্যাংক হলো- ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), এনসিসি ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়া এবং বিদেশি বহুজাতিক দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন-এইচএসবিসি।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে এসব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, ডলার নিয়ে অতিরিক্ত মুনাফার অভিযোগে ছয় ব্যাংকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সেগুলো হলো ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক এবং বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। এসব ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে সরিয়ে দিতে নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আমদানি বেড়ে যাওয়া ও প্রবাসী আয় কমার কারণে দেশে মার্কিন ডলারের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দিন দিন বাড়ছে দাম। অপরদিকে ডলারের বিপরীতে পতন হচ্ছে টাকার মান। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছে ৯৫ টাকা দরে, গত আগস্টে যা ছিল ৮৫ টাকা।
এসআই/এসএম