অভিযোগ করে ভোক্তার আয় ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা
প্রতিদিনই কোনো না কোনোভাবে পণ্য বা সেবা কিনে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন ভোক্তা। এমন অবস্থায় ভোক্তা স্বার্থ বা অধিকার ক্ষুণ্ন করায় এখন পর্যন্ত এক লাখ ৩৩ হাজার প্রতিষ্ঠানকে ৯২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর (ডিএনসিআরপি)।
পাশাপাশি গত ১৩ বছরে অধিদপ্তরে অভিযোগ করে এক কোটি ৩৫ লাখ টাকার বেশি পেয়েছেন অভিযোগকারীরা। অভিযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আদায় করা জরিমানার অংশ থেকে পুরস্কার হিসেবে তাদের এই টাকা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) ভোক্তা স্বার্থ সুরক্ষায় নিয়োজিত সর্বোচ্চ ফোরাম জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ২৪তম সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিষদের চেয়ারম্যান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
সভায় জানানো হয়, অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার পর থেকে চলতি বছরের ২৭ আগস্ট পর্যন্ত ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বাজার তদারকিমূলক অভিযান পরিচালনা করে এক লাখ ৩৩ হাজার ২৪৯ প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন অপরাধে ভোক্তা আইনে ৯২ কোটি ৭৫ লাখ ৭৫ হাজার ৩৪২ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। একই সময়ে গ্রাহকের দেওয়া অভিযোগ নিষ্পত্তি করে ৭ হাজার ৮০৬টি প্রতিষ্ঠানকে ৫ কোটি ৫০ লাখ ৮৪ হাজার ২০৮ টাকা জরিমানা করা হয়।
সভায় আরও জানানো হয়, নিষ্পত্তি করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আদায় করা জরিমানার ২৫ শতাংশ পুরষ্কার হিসেবে ৭ হাজার ৬৯৩ জন অভিযোগকারীদের দেওয়া হয়েছে এক কোটি ৩৫ লাখ ২৫ হাজার ৮০২ টাকা।
২৯ সদস্য বিশিষ্ট পরিষদের সভায় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও বিমা ব্যক্তিত্ব শেখ কবির হোসেন, এফবিসিসিআই এর সভাপতি জসিম উদ্দিন, কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বিএসটিআই এর মহাপরিচালক ড. নজরুল আনোয়ার, জনপ্রশাসনে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সরকারের সাবেক সচিব মো. আবদুল মালেক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ফেরদৌস আহমেদ, চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মনোয়ারা হাকিম আলী, এফবিসিসিআই এর পরিচালক প্রীতি চক্রবর্তীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সভাটি সঞ্চালনা করেন পরিষদের সচিব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
পরিষদের সদস্যরা শিশু খাদ্য, বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান, নকল, ভেজাল ওষুধ পণ্যসহ গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ কঠোর শাস্তি প্রয়োগ করতে পরামর্শ দেন।
জানা গেছে, ২০০৯ সালের ৬ এপ্রিল ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন প্রণীত হয় এবং এই আইনের ১৮ ধরা মোতাবেক ২০০৯ সালের ৮ জুন প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা হয়। আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী ২০০৯ সালের ২৪ নভেম্বর বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২৯ সদস্যের শক্তিশালী ‘জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ গঠিত হয়।
এসআই/এসএম