অনুমতি পেয়েও সোনা আমদানি না করাদের লাইসেন্স বাতিলের দাবি
অনুমতি পেয়েও যেসব প্রতিষ্ঠান সোনা আমদানি করছে না তাদের লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানিয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।
শনিবার (১৩ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে সোনা ব্যবসায়ীদের সংগঠনটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এন্টি স্মাগলিং অ্যান্ড ল’ এনফোর্সমেন্টের চেয়ারম্যান এনামুল হক খান দোলন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাজুসের যুগ্ম সম্পাদক বিধান মালাকার, পরিচালক ইকবাল উদ্দিন, সদস্য স্বপন চন্দ্র কর্মকার, বিকাশ ঘোষ, বাবুল রহমান ও নজরুল ইসলাম।
এক প্রশ্নের উত্তরে এনামুল হক খান দোলন বলেন, ২০১৮ সালে সোনা আমদানির জন্য লাইসেন্স দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত সাড়ে চার থেকে ৫০০ কেজি সোনা আমদানি হয়েছে।
তিনি বলেন, সোনা আমদানির লাইসেন্স দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখানে জুয়েলারি সমিতি সম্পৃক্ত ছিল না। এখন যারা লাইসেন্স নিয়েও আমদানি করছে না, কেন করছে না এটা আমাদের বোধগম্য নয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা লাইসেন্স দেওয়া প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার চিঠি দিয়েছি, ডেকে মৌখিকভাবে বলেছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
বাজুসের পক্ষ থেকে আমাদের বক্তব্য যারা লাইসেন্স নিয়ে সোনা আমদানি করছে না, তাদের লাইসেন্স যেন বাতিল করা হয়, এটাই আমাদের দাবি।
সারা দেশে জুয়েলারি শিল্পের বাজারে অস্থিরতা, চলমান সংকট ও সমস্যা, দেশি-বিদেশি চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য, অর্থপাচার ও চোরাচালান বন্ধ এবং কাস্টমসসহ সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জোরালো অভিযানের দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
এসময় এনামুল হক খান দোলন বলেন, প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ত-ঘামে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপব্যবহার করে প্রতিদিন সারা দেশের জল, স্থল ও আকাশ পথে প্রায় ২০০ কোটি টাকার অবৈধ সোনার অলংকার ও বার চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসছে। যা ৩৬৫ দিন বা বছর শেষে দাঁড়ায় প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা।
সোনা পাচার হওয়ায় বড় অংকের ডলার বিদেশে চলে যাচ্ছে। দেশের ডলার সংকটের এটা অন্যতম কারণ বলেও মনে করে এ সংগঠনটি।
এনামুল হক খান বলেন, চোরাকারবারিরা বাংলাদেশকে সোনা পাচারের নিরাপদ পথ হিসেবে ব্যবহার করে। এটা কথার কথা নয়, প্রতিষ্ঠিত সত্য। আমাদের দেশকে ব্যবহার করে প্রতিবেশী একটি দেশে সোনা পাচার হয়। এটা বন্ধ করতেই হবে।
তবে শুধু আইন প্রয়োগ করে চোরাচালান বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন এই ব্যবসায়ী। এনামুল হক খান বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর, কিন্তু তাদের সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। এজন্য তাদের প্রশিক্ষণ ও আধুনিক যন্ত্রপাতি দেওয়ার পাশাপাশি জব্দ করা সোনার ২৫ শতাংশ পর্যন্ত পুরস্কার হিসেবে দেওয়ার প্রস্তাব করেন বাজুস নেতারা। চোরাচালান বন্ধে প্রয়োজনে আরও কঠোর আইন প্রণয়ন ও বাজুসকে সম্পৃক্ত করে আইন প্রয়োগকারী সব দপ্তরের সমন্বয়ে সোনা চোরাচালানবিরোধী সেল গঠন করার পরামর্শ দেন তারা।
বৈধভাবে সোনা আমদানির জন্য একটি ব্যাংকসহ ১৮ প্রতিষ্ঠানকে ডিলার লাইসেন্স দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রত্যেককে দুই বছরের জন্য এই লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। তবে সোনা আমদানিতে প্রতি পদে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে।
লাইসেন্স পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- মধুমতি ব্যাংক, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড, জুয়েলারি হাউস, রতনা গোল্ড, অরোসা গোল্ড করপোরেশন, আমিন জুয়েলার্স, স্রেজা গোল্ড প্যালেস, জরোয়া হাউস লিমিটেড, মিলন বাজার, এসকিউ ট্রেডিং, এমকে ইন্টারন্যাশনাল, বুরাক কমোডিটিস এক্সচেঞ্জ, গোল্ডেন ওয়ার্ল্ড জুয়েলার্স, রিয়া জুয়েলার্স, লক্ষ্মী জুয়েলার্স, বিডেক্স গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ড ও ডি ডামাস দি আর্ট অব গ্যালারি।
এসআই/জেডএস