তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি কোনোভাবেই কাম্য নয়
পোশাক খাত ‘অল্প শোকে কাতর, অধিক শোকে পাথর’ বলে মন্তব্য করেছেন নিটওয়ার মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় শনিবার (৬ আগস্ট) দুপুরে মোহাম্মদ হাতেম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখন আর কিছু বলার নেই। এভাবে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি কোনোভাবেই কাম্য নয়।
তিনি বলেন, সরকার অবশ্যই বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধি হলে সেটা সমন্বয় করবে। এর সঙ্গে কোনো দ্বিমত নেই। তাই বলে কী এক সঙ্গে ৪৪-৫১ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি? এটা অস্বাভাবিক, এটা হতে পারে না।
এর আগেও বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কথা বলে সরকার বাড়িয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিন্তু বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমানোর পর বাংলাদেশে কমেছে বলে আমার জানা নেই। এখানে আমাদের প্রস্তাব প্রতি ছয় মাসে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা উচিত।
তিনি বলেন, আইএমএফের চাপে পড়ে সরকার যদি এটি করে থাকে তবে এক সঙ্গে বৃদ্ধি না করে সরকার তাদেরকে বলতে পারতো, পর্যায়ক্রমে করা হবে। আরেকটা হতে পারতো অকটেনের দাম কিছুটা বাড়িয়ে ডিজেলের দাম আপাতত না বাড়ানো। কারণ এই বছরেই ডিজেলের দাম একবার বাড়ানো হয়েছিল। মূল্যবৃদ্ধির এই প্রভাব পড়বে সাধারণ জনগণের উপর। এ মুহূর্তে এভাবে দাম বাড়ানো ঠিক হয়নি।
বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি বলেন, কেউ কেউ বলতে চাইছেন জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে রপ্তানি খাতের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি বলছি, এটার সঙ্গে সম্পর্ক আছে। এটা কীভাবে? প্রথমত পণ্য আমদানি-রপ্তানির জন্য যে পরিবহন ব্যবহার করি, সেই পরিবহন কস্ট আজ থেকে বেড়ে গেছে। এমনিতেই তেলের দাম ১০ শতাংশ বাড়লে পরিবহন খরচ বাড়ানো হয় ২০ শতাংশ। এখন ৪৪ শতাংশ বেড়েছে। এবার যে কত শতাংশ বাড়াবে তা সহজে অনুমান করা যায়।
শুধু তেলের দামের মধ্যেই পরিবহন খরচ সীমাবদ্ধ নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবকিছু মিলে বাড়াতে পারে। কিন্তু তারা তেলের দামের অজুহাতে এই মূল্যবৃদ্ধি করে। স্বাভাবিকভাবে যাতায়াতের ভাড়া বাড়িয়ে দেবে। এছাড়া যাতায়াত ভাড়া বাড়লে আমদানি-রপ্তানির উপর প্রভাব পড়বে। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দু’দিন পর বিদ্যুতের মূল্য আবারও বৃদ্ধির জন্য যৌক্তিকতা আসবে। আর বিদ্যুতের মূল্য আবারও বাড়ানো হলে সরাসরি আমাদের উপর আসবে। তখন আরেকটা ইফেক্ট পড়বে।
বিকেএমইএর সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য কমছে, তখন সরকার বাড়িয়েছে। সরকার বলছে, ডিজেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য করা হয়েছে। এক দফায় এতো বাড়ানো ঠিক হয়নি। একসঙ্গে না বাড়িয়ে ক্রমান্বয়ে বাড়ালে ভালো হতো।
শুক্রবার রাত ১২টার পর জ্বালানি তেলের নতুন দাম কার্যকর হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, পেট্রোলের দাম ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা এবং অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করা হয়েছে।
এমআই/জেডএস