টাকার মান কমেছে আরও ৫০ পয়সা
ডলারের বিপরীতে টাকার মান আরও এক দফা কমেছে। এবার টাকার মান কমেছে ৫০ পয়সা। গত মঙ্গলবার ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য ছিল ৯৩ টাকা ৯৫ পয়সা। আজ বৃহস্পতিবার ৫০ পয়সা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪ টাকা ৪৫ পয়সায়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাজার স্থিতিশীল রাখতে আজ ৭০ মিলিয়ন ডলার ছাড়া হয়েছে।
উল্লেখ্য,গত বছরের ২১ জুলাই প্রতি ডলারের বিপরীতে বিনিময় হার ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরে টাকার মূল্য ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ কমেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। এরপর থেকে বড় ধরনের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলার সংকট শুরু হয়। যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে।
২০২১ সালের আগস্টের শুরুতেও আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের মূল্য একই ছিল। ৩ আগস্ট থেকে দুই-এক পয়সা করে বাড়তে বাড়তে গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথমবারের মতো ৮৫ টাকা ছাড়ায়। এ বছরের ৯ জানুয়ারিতে এটি বেড়ে ৮৬ টাকায় পৌঁছে। এরপর ২২ মার্চ পর্যন্ত এ দরেই স্থির ছিল। পরে গত ২৩ মার্চ আন্তঃব্যাংকে আরও ২০ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সায় দাঁড়ায়। ২৭ এপ্রিল আরও ২৫ পয়সা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা। ১০ মে বাড়ে আরও ২৫ পয়সা। ১৬ মে বাড়ে ৮০ পয়সা। ২৩ মে বাড়ে ৪০ পয়সা।
ফলে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম গিয়ে ঠেকে ৮৭ টাকা ৯০ পয়সায়। এর পর গত ৩১ মে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারে ৮৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর ৪ জুন হয় ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা। ৫ জুন হয় ৯১ টাকা ৫০ পয়সা ৬ জুন দাঁড়ায় ৯১ টাকা ৯৫ পয়সা। ৭ জুন ডলারের দাম গিয়ে ঠেকে ৯২ টাকায়। এরপর ৮ জুন কমে ৯১ টাকা ৫০ পয়সা হয়। পরদিন ৯ জুন আবার ৯২ টাকা হয়। ১৩ জুন ৯২ টাকা ৫০ পয়সায় এবং ২৩ জুন হয় ৯২ টাকা ৯৫ পয়সা, ২৮ জুন হয় ৯৩ টাকা ৪৫ পয়সা।
আমদানি মূল্য বৃদ্ধি এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ কমার কারণে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে মার্কিন ডলারের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। রপ্তানি আয়ের তুলনায় আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়া, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ পড়েছে।
গত অর্থবছরের জুলাই থেকে মে মাসের মধ্যে আমদানি ব্যয় ৩৯ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৭৫ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে রপ্তানি আয় ৩৩ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪৪ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার।
এমআই/এসকেডি