বাণিজ্য প্রসারে ৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
বাণিজ্য প্রসারে ১.০৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের এ অর্থে দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ করা হবে। বিশ্বব্যাংকের এই অর্থে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ ঘটবে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৯০ টাকা ধরে)।
বুধবার (২৯ জুন) সংস্থাটির ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আঞ্চলিক করিডোর বরাবর বাণিজ্য ও পরিবহন খরচ এবং ট্রানজিট সময় কমিয়ে আনা হবে। বাংলাদেশ ও নেপালের আঞ্চলিক বাণিজ্যের উন্নতিতে সহায়তা করার জন্য বিশ্বব্যাংক এই ঋণ অনুমোদন করেছে।
এ অর্থায়নের আওতায় প্রথম ধাপে বাংলাদেশ এবং নেপালের বাণিজ্য আরও আধুনিক ও ডিজিটাল করা হবে। কারণ এ করিডরে দীর্ঘ মেয়াদে ম্যানুয়াল এবং কাগজভিত্তিক বাণিজ্য প্রক্রিয়া চলমান। অটোমেশনে দ্রুত বর্ডার ক্রসিং টাইম সক্ষম অর্জন এবং ট্রাক এন্ট্রি এবং এক্সিট দ্রুতকরণ করা হবে। ইলেকট্রনিক সারি এবং স্মার্ট পার্কিংয়ের ইলেকট্রনিক ট্র্যাকিং ইনস্টল করা হবে। সবুজ ও জলবায়ু-স্থিতিস্থাপক নির্মাণ নিশ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে প্রোগ্রামটি নির্বাচিত সড়ক করিডোর উন্নত করতে এবং মূল স্থলবন্দর এবং কাস্টম অবকাঠামো উন্নত করতে সহায়তা করবে। এটি স্থলবেষ্টিত নেপাল ও ভুটানকে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রবেশদ্বার দেশগুলোর সঙ্গে একীভূত করতে সহায়তা করবে।
দক্ষিণ এশীয় বিষয়ক বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফার বলেন, আঞ্চলিক বাণিজ্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য জরুরি। এর মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় সম্ভাবনা সরবরাহ করে। আঞ্চলিক বাণিজ্য দক্ষিণ এশিয়ার মোট বাণিজ্যের মাত্র ৫ শতাংশ, যেখানে পূর্ব এশিয়ায় এটি ৫০ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়া উল্লেখযোগ্যভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে আঞ্চলিক বাণিজ্য জরুরি। আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সংযোগ বৃদ্ধি করে এই অঞ্চলে লাখ লাখ মানুষের জন্য সুযোগ তৈরি করতে পারে।
বাংলাদেশ এবং ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত এবং নেপালের মধ্যে বাণিজ্য ২০১৫ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ছয় গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রকল্পটি বাংলাদেশকে আঞ্চলিক বাণিজ্য ও পরিবহনের উন্নতিতে সাহায্য করবে এবং প্রক্রিয়াগুলোর মধ্যে স্বয়ংক্রিয়তা আনতে। এর ফলে কোভিড-১৯ মহামারির মতো সংকটের মধ্যে বাণিজ্য চলমান থাকবে।
সড়ক ও স্থলবন্দরের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংক
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সঙ্গে শেওলা স্থলবন্দরকে সংযুক্ত খাতে বাংলাদেশকে ৭৫ দশমিক ৩৪ কোটি ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সঙ্গে শেওলা স্থলবন্দরকে সংযুক্ত করে ৪৩ কিলোমিটার দুই-লেনের সিলেট-চরকাই-শেওলা সড়কটিকে একটি জলবায়ু-সহনশীল চার-লেন সড়কে উন্নীত করা হবে। এর ফলে ভ্রমণের সময় ৩০ শতাংশ কমে আসবে। প্রকল্পটি বেনাপোল, ভোমরা এবং বুড়িমারী স্থলবন্দরে ডিজিটাল সিস্টেম, অবকাঠামো এবং আরও কিছু প্রক্রিয়াকে বাস্তবায়ন করবে। বাংলাদেশের তিনটি বৃহত্তম স্থলবন্দর যা প্রায় ৮০ শতাংশ ভূমি-ভিত্তিক বাণিজ্য পরিচালনা করে। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের আধুনিকীকরণে সহায়তা করবে যা বাংলাদেশের সমস্ত আমদানি-রপ্তানি ঘোষণার ৯০ শতাংশ পরিচালনা করে।
নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধিতে বিশ্বব্যাংক নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণে ২৭ দশমিক ৫ কোটি ডলার ব্যয় করা হবে। ফলে পূর্ব-পশ্চিম হাইওয়ে বরাবর ৬৯ কিলোমিটার দ্বি-লেনের বুটওয়াল-গোরুসিংহে-চনাউতা সড়ককে একটি জলবায়ু-সহনশীল চার-লেনের হাইওয়েতে উন্নীত করবে। এতে ভ্রমণের সময় ৩০ শতাংশ হ্রাস করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এসআর/এসকেডি