পোশাক শিল্পের আমদানি-রপ্তানি জটিলতার দ্রুত সমাধান চায় বিজিএমইএ
করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় বর্তমানে রপ্তানি আদেশ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে কাস্টমস সংশ্লিষ্ট কাজ সহজ করে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে গতিশীলতার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু চট্টগ্রামে কাস্টমস হাউজ পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট আমদানিতে এইচএস কোডসহ নানা জটিলতার কারণে আমদানি-রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
সোমবার (২০ জুন) বিকেলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে বিজিএমইএ নেতাদের সঙ্গে কাস্টমস হাউজ কমিশনারের এক জরুরি সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিজিএমইএর এই নেতা বলেন, বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অক্ষত রপ্তানি চালানগুলো দ্রুত জাহাজীকরণে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী তৈরি পোশাক শিল্পের অব্যাহত প্রবৃদ্ধি অর্জনে ও এর গুরুত্ব বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক এ খাতের সমস্যাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধানের নির্দেশনা রয়েছে।
বিজিএমইএর সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দাবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার রপ্তানি খাতকে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন ধরনের ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ পোশাক শিল্পের আমদানি চালানে এইচএস কোড সংক্রান্ত জটিলতায় নমনীয় ভাব পোষণ না করে উচ্চ হারে জরিমানা আদায় করছে। ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো রপ্তানি সক্ষমতা হারাচ্ছে।
নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও রপ্তানিখাতের গুরুত্ব বিবেচনায় পোশাক শিল্পের সমস্যা সমাধানে নমনীয় ভাব পোষণের ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোশিয়েশনের সভাপতি এ.কে.এম. আকতার হোসেন বলেন, দেশের শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে রপ্তানি খাতের গুরুত্ব বিবেচনায় পোশাক শিল্পের আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম দ্রুত সম্পাদনের কোনো বিকল্প নেই।
তিনি পোশাক শিল্পের পণ্য চালান দ্রুত খালাসে এইচএস কোড সংক্রান্ত জটিলতায় নিরসন করে কার্যক্রম সহজীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভায় বক্তারা বলেন- পোশাক শিল্পের কাঁচামাল শুল্ক মুক্তভাবে আমদানি করা হয়, রপ্তানির উদ্দেশ্যে। নির্ধারিত বন্ডিং মেয়াদের মধ্যে রপ্তানিতে ব্যর্থ হলে বন্ড কাস্টমস কর্তৃক দাবিনামা জারি করে শুল্ক আদায় করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কাঁচামাল আমদানিতে এইচএস কোড সংক্রান্ত জটিলতায় অন্যান্য বাণিজ্যিক পণ্যের ন্যায় রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পের ক্ষেত্রেও উচ্চহারে জরিমানা আরোপের ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সমূহের আমদানি চালান খালাস বিলম্বে রপ্তানিতে সক্ষমতা হারাচ্ছে।
সভায় চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ কমিশনার এম. ফখরুল আলম বলেন, জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে পোশাক শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। পোশাক শিল্পের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে সম্পাদনে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ নিরলসভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এইচএস কোড সংক্রান্ত জটিলতার নিরসনসহ অন্যান্য সমস্যার বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক নীতিগত সিদ্ধান্তের প্রয়োজন। সেজন্য বিষয়গুলো দ্রুত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে উপস্থাপন করা দরকার।
তিনি বলেন, বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অক্ষত পোশাক শিল্পের রপ্তানি পণ্য চালান দ্রুত জাহাজীকরণে কাস্টমস হাউজ চট্টগ্রামের কোনো আপত্তি নেই। পোশাক শিল্পের ক্ষেত্রে কাস্টমস হাউস সংশ্লিষ্ট বিদ্যমান জটিলতা নিরসন করে দ্রুত কাজ করবে।
তিনি বলেন, পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধান ও কাজ সহজের মাধ্যমে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ সদা প্রস্তুত রয়েছে।
কেএম/ওএফ