পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের পক্ষে প্রতিমন্ত্রী
পুঁজিবাজারে কালো টাকা (অপ্রদর্শিত অর্থ) বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার যে দাবি তোলা হয়েছে, এর সঙ্গে একমত পোষণ করে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, বিষয়টির সঙ্গে আমি একমত, সুযোগ পেলে কথা বলব।
বুধবার (১৫ জুন) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সব সরকারের আমলেই কিছুটা ছাড় দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ অর্থনীতির মূলধারায় আনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এতে ভালো পরিমাণ টাকা অর্থনীতির মূলধারায় এসেছে এবং ভালো রাজস্ব আদায় হয়েছে।
ড. শামসুল আলম বলেন, অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার সুযোগ দেওয়ায় অনেকে সমালোচনা করেন। যে অর্থনীতিবিদরা সমালোচনা করেন, তারাও এ অপ্রদর্শিত অর্থকে নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিয়ে অর্থনীতির মূল ধারায় আনার সুযোগ দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, আমরা কয়েকশ কোটি টাকা রাজস্ব আসতে দেখেছি। কখনো কখনো চার-পাঁচ হাজার কোটি টাকা এবং সর্বশেষ আমার যেটা মনে আছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা সাদা হয়েছে এ সরকারের আমলে, যা মোটেই নগণ্য নয়।
তিনি আরও বলেন, কৃষি খাতে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা। কাজেই ১০ হাজার কোটি টাকা যদি মূল স্রোতে আসে, সেটাকে একেবারেই কম বলা যাবে না। অনেক মন্ত্রণালয়ের মোট বাজেটই ১০ হাজার কোটি টাকা। কাজেই কিছুটা ছাড় দিয়ে হলেও অপ্রদর্শিত অর্থ মূলধারায় যদি আনা হয়, তাতে অর্থনৈতিকভাবে অবদান রাখার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
সভায় বিএমবিএ সভাপতি ছায়েদুর রহমান ৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত আয় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিমন্ত্রী নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন।
সভায় বিএমবিএর পক্ষ থেকে বাজেটে পাঁচটি দাবি পুনর্বিবেচনার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়। এগুলো হচ্ছে- তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যকার কর হারের ব্যবধান কমপক্ষে ১৫ শতাংশ করা, প্রস্তাবিত বাজেটে মার্চেন্ট ব্যাংকের কর হার সাড়ে ৩৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ২৭ শতাংশ করা হয়েছে। এটা আরও কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা।
লভ্যাংশ দেওয়ার সময় ১০ শতাংশ হারে অগ্রিম কর কাটা হয়। পরবর্তীতে আবার লভ্যাংশ পাওয়া বিনিয়োগকারীর ব্যক্তিগত আয়কর রির্টানের সময় তার ওপর প্রযোজ্য হারে কর দিতে হয়। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ গ্রহণ না করে রেকর্ড ডেটের আগেই বিক্রয় করে দেয়, যা বাজারকে অস্থির করে। তাই অগ্রিম করটিকে চূড়ান্ত কর হিসাবে বিবেচনা করতে হবে।
তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাট হার ১০ শতংশ করা ও ৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া।
এমআই/আরএইচ