স্থিতিশীল পোশাক খাতের জন্য দরকার ন্যায্যমূল্য : মেয়র আতিক
স্থিতিশীল পোশাক খাতের স্বার্থে ন্যায্য ও স্থিতিশীল প্রাইস (মূল্য) দরকার বলে মনে করছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সাসটেইনেবল সাপ্লাই চেইনের স্বার্থে সাসটেইনেবল প্রাইস দরকার। এজন্য ক্রেতা, ব্র্যান্ডসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে।
মঙ্গলবার (১০ মে) রাজধানীতে ৩য় বাংলাদেশ অ্যাপারেল ফোরাম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্প, বিশেষ করে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর নিরাপত্তা বিষয়ক বিধিনিষেধগুলো মেনে চলা ও নিশ্চিত করার বিষয়ে সদা সতর্ক হয়েছে। তিনি আরও নৈতিকতাপূর্ণ ও টেকসই শিল্প নিশ্চিত করার জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে পোশাক শিল্পের টেকসই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা বেগবান করতে এ বছরে আমরা সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরামের (এসএএফ) সম্মেলনে সব ফ্যাশন স্টেকহোল্ডারকে একই ছাদের নিচে এনেছি। বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারির পর এনেছি, যে মহামারিটি বৈশ্বিক পোশাক সরবরাহ চেইনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। এই ফোরামটি একটি উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার প্লাটফর্ম, যেখানে টেকসই বিষয়ে আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যগুলো কীভাবে অর্থপূর্ণভাবে, বাস্তবসম্মত প্রক্রিয়ায় অর্জন করা যেতে পারে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান ভ্যান লিউয়েন বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে নিরাপত্তা ও টেকসই ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তারপরও শিল্পকে আরও টেকসই করতে আরও করণীয় রয়েছে, যেখানে স্টেকহোল্ডারদের সম্পৃক্ততা আর সহযোগিতাই হচ্ছে মূল বিষয়।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আজকের দিনে বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলো শুধু নিরাপদই নয়, বরং সেগুলো আরও গতিশীল, আধুনিক, জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ এখন সর্বোচ্চ সংখ্যক সবুজ কারখানার আবাসস্থল। আমরা বিশ্বাস করি যে টেকসই উন্নয়ন কোনো স্প্রিন্ট নয়, এটি একটি ম্যারাথন। আমরা শিল্পে সামাজিক ও পরিবেশগত ক্ষেত্রে যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছি, তা বজায় রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। পাশাপাশি আমরা ব্যবসায় সক্ষমতা বাড়ানোর ওপরও নজর দিয়েছি।
কটন কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনালের ইউরোপীয় ব্র্যান্ড ও রিটেইলারদের পরিচালক স্টেফানি দেয়ারস-র্যাটক্লিফ বলেন, সাসটেইনেবিলিটির কোনো বিকল্প নেই, এটি এখন ফ্যাশন শিল্পের জন্য অপরিহার্য। কটন কাউন্সিল শিল্পে টেকসই তুলার সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।
বিজিএমইএ’র পরিচালক এবং বিএই’র (বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এক নতুন বাস্তবতায় বিশ্বব্যাপী ব্যবসার দৃশ্যপটের রূপান্তর ঘটেছে এবং সব উদ্বেগের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে টেকসই উন্নয়ন। সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরাম টেক্সটাইল ও পোশাক সাপ্লাই চেইনকে টেকসই করতে টেকসই উন্নয়ন ক্ষেত্রে অর্জিত অগ্রযাত্রা আরও বেগবান করার লক্ষ্য নিয়ে একটি বৈশ্বিক ফোরাম হিসেবে কাজ করছে।
নেদারল্যান্ডস দূতাবাস ৩য় সাসটেইনিবিলিটি অ্যাপারেল ফোরামে টাইটল স্পন্সর হিসেবে সম্মেলনে সহযোগিতা করেছে। এছাড়া প্যাসিফিক জিনস, কটন ইউএসএ ও কেডিএস প্লাটিনাম স্পন্সর হিসেবে; ইপিক, লাউডেস ফাউন্ডেশন, হিগ ও এইচএন্ডএম গোল্ড স্পন্সর হিসেবে; বেটার ওয়ার্ক বাংলাদেশ ও প্রাইম ব্যাংক সিলভার স্পন্সর হিসেবে এবং বিকাশ, ব্র্যাক, প্যাসিফিক এসোসিয়েটস ও রহিমআফরোজ সোলার ব্রোঞ্জ স্পন্স হিসেবে সাসটেইনিবিলিটি অ্যাপারেল ফোরাম সম্মেলন আয়োজনে সহযোগিতা করেছে।
দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে ৫০ জনের বেশি বক্তা এবং ২০টি দেশ থেকে সবুজ প্রবৃদ্ধি নিয়ে কাজ করে এমন ২০টি প্রদর্শনকারী কোম্পানি অংশগ্রহণ করেছে।
এমআই/এসএসএইচ