৪২ লাখ টাকা শুল্ক ফাঁকির অপচেষ্টা রুখে দিল কাস্টম
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে চীন থেকে কোটেড ক্যালসিয়াম কার্বনেট আমদানির ঘোষণা দিয়ে ডেক্সট্রোজ মনোহাইড্রেট আনা হয়েছে। যার মাধ্যমে প্রায় ৪২ লাখ ১৩ হাজার টাকার রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা করেছিল ঢাকার বংশালের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এন বি ট্রেডিং হাউস।
রোববার (৮ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার (এআইআর) মো. শরফুদ্দিন মিঞা।
কাস্টম সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার বংশাল থানার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স এন বি ট্রেডিং হাউস চীন থেকে কোটেড ক্যালসিয়াম কার্বনেট ঘোষণায় পাঁচ কন্টেইনার পণ্য আমদানি করে। আমদানি করা পণ্য খালাসের লক্ষ্যে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এম এন এন্টারপ্রাইজ অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার আওতায় রপ্তানিকারক, তৈরি দেশ, আমদানিকারকের ব্যবসায়ের ধরন ও ঠিকানা, পণ্যের বর্ণনা প্রভৃতি বিশ্লেষণ করে পণ্যচালানটিতে অসত্য ঘোষণায় পণ্য আমদানির বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা পায়। এরপর এআইআর পণ্যচালানটির খালাস কার্যক্রম স্থগিত করার লক্ষ্যে বিল অব এন্ট্রি লক করে। চীন থেকে পণ্যচালানটি নিয়ে গত জাহাজ ১৮ মার্চ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়।
কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার (এআইআর) মো. শরফুদ্দিন মিঞা ঢাকা পোস্টকে বলেন, শনিবার সংশ্লিষ্ট কন্টেইনার বন্দরের ভেতরে খুলে এআইআর টিম পণ্য পরীক্ষা করে। কন্টেইনারে রাখা ৪ হাজার ৮০০টি বস্তা শতভাগ কায়িক পরীক্ষার সময় দেখা যায় বাদামি রংয়ের বস্তাগুলোর উপরে আঁঠা নিয়ে লাগানো সাদা কাগজে প্রিন্ট করে কোটেড ক্যালসিয়াম কার্বনেট লেখা রয়েছে। কিন্তু বস্তা খোলার পর এর ভেতরে সাদা পলিথিনের বস্তুর ঘোষিত পণ্যের পরিবর্তে ডেক্সট্রোজ মনোহাইড্রেট পাওয়া যায়। এতে সর্বমোট ১২০ টন ডেক্সট্রোজ মনোহাইড্রেট পাওয়া যায়। যার আনুমানিক শুল্কায়নযোগ্য মূল্য ৫৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। এর মাধ্যমে প্রায় ৪২ লাখ ১৩ হাজার টাকার রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা করা হয়।
তিনি বলেন, পণ্যচালানটিতে উচ্চ মূল্য ও উচ্চ শুল্কের পণ্য ডেক্সট্রোজ মনোহাইড্রেট আমদানি করে আনুমানিক প্রায় ৪২ লাখ ১৩ হাজার টাকা সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা করা হয়। কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর শাখার কঠোর নজরদারির কারণে এই অপচেষ্টাও নস্যাৎ করে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনারের নির্দেশনা অনুযায়ী দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কাস্টম কমিশনারের নির্দেশনা অনুযায়ী কাস্টম অ্যাক্ট ১৯৬৯ এর সেকশন-৩২ ভঙ্গের দায়ে ও একই আইনের সেকশন ১৫৬ (১) এর টেবিলের ১৪ অনুযায়ী আমদানিকারকের উপর ৮৮ লাখ টাকা অর্থদণ্ড ও জরিমানা করা হয়।
এ পণ্যচালানে ঘোষিত বিবরণ অনুযায়ী শুল্ক কর ছিল ৬ লাখ ৮২ হাজার ৭৩৩ টাকা। কায়িক পরীক্ষায় পাওয়া পণ্য অনুযায়ী শুল্ক কর ও জরিমানা বাবদ আদায় করা হয়েছে ১ কোটি ৩৬ লাখ ৯৯ হাজার ৫৫৯ টাকা। অর্থাৎ মোট ১ কোটি ৩০ লাখ ১৬ হাজার টাকা ঘোষণা অতিরিক্ত আদায় করা হয়েছে।
কেএম/জেডএস