বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে মসলা
রমজানের শুরুতেই জিরা, দারুচিনি, এলাচ, আদাসহ মসলা জাতীয় পণ্যের দাম কেজিতে ৪০-৫০ টাকা বেড়েছে। এখনও সেই দামেই বিক্রি হচ্ছে এসব মসলা। তার সঙ্গে নতুন করে বেড়েছে পেঁয়াজ ও রসুনের দাম। ফলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে ঈদ সামগ্রী কেনার পর মসলা কিনতে বিপাকে পড়েছেন মধ্য ও নিন্মআয়ের ক্রেতারা।
ক্রেতারা বলছেন, নিত্যপণ্যের মতো মসলাও অপরিহার্য পণ্য। কারণ রান্না করলে অবশ্যই মসলার ব্যবহার করতে হয়। রমজান মাসজুড়ে এসব পণ্যের দাম বেশি ছিল। এখন ঈদের এক সপ্তাহ বাকি থাকলেও দাম আর কমছে না। বাড়তি দামেই আমাদের পণ্য কিনতে হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারে আসা ক্রেতা লেয়াকত হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, রোজার মধ্যে পেঁয়াজের দাম কম ছিল, এখন ঈদ সামনে রেখে আবারও পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম বেড়েছে। কোনো কারণ ছাড়াই ব্যবসায়ীরা হুট করে এসব পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন, অথচ সরকারের পক্ষ থেকে কেন এসব পণ্যের দাম বাড়ানো হলো তার তদারকি করা হলো না।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা এবং বাড্ডাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারগুলোতে প্রকারভেদে জিরা বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫৫০ টাকা কেজিতে। আর মহল্লার দোকানগুলোতে ১০০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। মাঝারিমানের দারুচিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫০ থেকে ১৫৫০ টাকা। ভালোমানের এলাচ বিক্রি হচ্ছে ১৯০০ থেকে ৩০০০ হাজার টাকা কেজিতে। যা এক মাস আগে ছিল ১৭০০ টাকা ২৬০০ টাকা। নিন্মমানের এলাচের কেজি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকার নিচে।
একইভাবে ৬০ থেকে ৭০ টাকার দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। আমদানি করা আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে। যা ছিল ৯০ থেকে ১২০ টাকা। শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা কেজিতে। রমজানের শুরুতে ছিল ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি।
সরকারি বাজার মনিটরিং প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির তথ্য মতে, রাজধানীতে এক মাস আগে জিরা কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৪২০ টাকা। আজ বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা কেজিতে।
টিসিবির বাজার দর অনুযায়ী আজ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা কেজিতে। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ২৫-৩০ টাকা কেজিতে। আজ দেশি হলুদ বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা কেজিতে। আমদানি হলুদ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা কেজিতে। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে। আর আমদানি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৩০ টাকায়।
রামপুরা বাজারে আসা ক্রেতা মনোয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত মাসের বেতনের টাকায় বাসা ভাড়া চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনছি। বোনাস পাওয়ার পর ছেলে-মেয়ে পরিবারের সবার জন্য কিছু পোশাক কিনেছি। এখনো ঈদের দিনের জিনিসপত্র কিনতে পারিনি, কারণ আয় যা ছিল শেষ। আজকে এক বন্ধুর কাছ থেকে টাকা ধার করে মসলা কিনতে এসেছি। কিন্তু যে দাম কেনারই সাহস পাচ্ছি না।
মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এনায়েত উল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদকে সামনে রেখে আমরা মসলার দাম বাড়াইনি, যা বাড়ার বেড়েছে আগে। চাল-ডাল, গ্যাস-বিদ্যুৎ-তেলের দাম যেভাবে বেড়েছে সেই তুলনায় মসলার বাজার সস্তা। এতে সাধারণ মানুষের পকেটে খুব বেশি প্রভাব পড়ে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এমআই/জেডএস