সুনামগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত ১৫
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৯ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে। পুলিশ সংঘর্ষ ঠেকাতে সাত রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়েছে। মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তাহিরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা রাজন চন্দ ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হাফিজ উদ্দিনের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাজন চন্দের বাবা সাংবাদিক রমেন্দ্র নারায়ণ বৈশাখের ওপর হাফিজ উদ্দিনের সমর্থকরা হামলা করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। মঙ্গলবার বিকেলে রমেন্দ্র নারায়ণ বৈশাখের ওপর হামলার ঘটনায় মানববন্ধনের আয়োজন করা হলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হন। পুলিশ সংঘর্ষ থামাতে রাবার বুলেট ছুড়লে গুলিবিদ্ধ হন কয়েকজন।
আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ পাঁচজনকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তারা হলেন- ডালিয়া নারগিস সুমি (৫০), আনজু মিয়া (৩০), অনিক মিয়া (২৫), বাবলী চৌধুরী (৩৫) ও অংকন গনি (১২)। এছাড়াও আহত নেজারুল ইসলাম (৩০), মাসুম মিয়া (২২), রুমেন মিয়া (৩০), রুনা বেগম (৪৫), তানসেন তালুকদার তুষার (৩০), রাসেল মিয়া (৩০), পারভীন আক্তার (৪৯) ও এমদাদুল মিয়াকে (৩৫) তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সুমন বর্মণ জানান, সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে ৯ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুরুতর আহতদের সুনামগঞ্জে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
সাংবাদিক রমেন্দ্র নারায়ণ বৈশাখের ছেলে রাজন চন্দ জানান, সংবাদ প্রকাশের জের ধরে গত ২০ ফেব্রুয়ারি তার বাবা রমেন্দ্র নারায়ণ বৈশাখের ওপর হাফিজ উদ্দিন ও তার ভাতিজা আবুল বাশারসহ কয়েকজন হঠাৎ করে হামলা করেন। তিনি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেলে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধন চলাকালে হাফিজ উদ্দিনের সমর্থকরা আবারও এসে হামলা করেন। এ সময় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তানসেন তালুকদার তুষার আহত হলে তার সমর্থক ও স্বজনরা উত্তেজিত হন। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়লে দুই নারীসহ অনেকেই আহত হয়েছেন।
উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হাফিজ উদ্দিন বলেন, আমি আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সালিস বৈঠকে ছিলাম। বৈঠক শেষে বাড়ির দিকে রওয়ানা দিয়ে জানতে পারি তানসেন তালুকদার তুষার আমার চাচাতো ভাই নাজমুল হুদা সংগ্রামকে মোটরসাইকেল দিয়ে ধাক্কা দিয়েছে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
তাহিরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ তরফদার জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষ ঠেকাতে সাত রাউন্ড গুলি ছুড়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে কামরুল ইসলাম, বদরুজ্জামান, আসাদ মিয়া ও সৈয়দ গোলাম হোসেন নামে চারজনকে আটক করা হয়েছে।
সাইদুর রহমান আসাদ/আরএআর