এবার কাদের মির্জার অনুসারী ৯ চেয়ারম্যান প্রার্থীর পাল্টা অভিযোগ
এবার নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী ৯ চেয়ারম্যান প্রার্থী সপ্তম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমানের কাছে তারা লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগকারীরা হলেন- সিরাজপুর ইউনিয়নের নাজিম উদ্দিন মিকন (অটোরিকশা), চরপার্বতী ইউনিয়নের মোজাম্মেল হোসেন কামরুল (টেলিফোন), চরহাজারী ইউনিয়নের মহি উদ্দিন সোহাগ (আনারস), চরকাঁকড়া ইউনিয়নের হাজী সফি উল্যাহ (অটোরিকশা), চরফকিরা ইউনিয়নের জামাল উদ্দিন লিটন (মোটরসাইকেল), রামপুর ইউনিয়নের ইকবাল বাহার চৌধুরী (মোটরসাইকেল), মুছাপুরের আইয়ুব আলী (আনারস), চরএলাহীর আবদুল মালেক (চশমা) এবং সাহাব উদ্দিন (অটোরিকশা)। তারা সবাই মেয়র কাদের মির্জার অনুসারী ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সমর্থিত ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় সুষ্ঠু ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠানে খিজির হায়াত খান, মিজানুর রহমান বাদল ও ফখরুল ইসলাম রাহাত সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন। তারা নির্বাচনী কর্মী সভায় তথাকথিত চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, মাদকসেবীদেরকে নিয়ে কাদের মির্জার অনুসারী চেয়ারম্যান প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার অপপ্রচার চালাচ্ছেন এবং নিরীহ ভোটারদেরকে হুমকি দিচ্ছে। এছাড়াও তারা বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম মানহানিকর বক্তব্য দিচ্ছে।
১ নম্বর সিরাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজিম উদ্দিন মিকন ঢাকা পোস্টকে বলেন, খিজির হায়াত খান, মিজানুর রহমান বাদল ও ফখরুল ইসলাম রাহাত আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থী মাইন উদ্দিন মামুনের নির্বাচনী কর্মী সভায় তথাকথিত চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও মাদকসেবীদেরকে নিয়ে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসব মিথ্যা, বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
৭ নম্বর মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী আইয়ুব আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নানা ষড়যন্ত্র করছেন। মানুষদের বাড়ি বাড়ি হুমকি দিচ্ছেন। আমার অনুসারীদেরকেও হুমকি দিচ্ছেন। তাদের কাছে অবৈধ অস্ত্র ও ভাড়াটে সন্ত্রাসী রয়েছে।
এ বিষয়ে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ঢাকা পোস্টকে বলেন, যারা আমাকে বার বার হত্যা চেষ্টা করেছে তারাই বর্তমানে ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে আমার অনুসারীদের হুমকি দিচ্ছে। আমি প্রশাসনকে বলেছি- আমার কোনো কর্মী যদি অন্যায় অনিয়মের মধ্যে থাকে, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। আমি একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে। এর বাইরে কোনো কিছু হলে জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
অভিযোগের বিষয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল ঢাকা পোস্টকে বলেন, উনি যা বলেছেন তা পুরোটা মিথ্যা। প্রশাসন সব সময় আমাদের সঙ্গে আছে। আমরা কোথাও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাই না।
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমার কাছে ৯ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী অভিযোগপত্র দিয়েছেন। আমি অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এর আগে গতকাল বুধবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমানের কাছে কোম্পানীগঞ্জের আটজন চেয়ারম্যান প্রার্থী বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেন।
প্রসঙ্গত, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সপ্তম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কোম্পানীগঞ্জের ৮টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এসব ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪৩ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৮৬ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৩২৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
হাসিব আল আমিন/আরএআর