এখন আর একা চলতে ভয় পায় না তারা
মার্শাল আর্ট বা কারাতের মতো শারীরিক কৌশল নারীর সুরক্ষায় শক্ত একটি হাতিয়ার। নারীর ক্ষমতায়ন, আত্মবিশ্বাস ও শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এই প্রশিক্ষণ পেয়েছে মাগুরার ৫৭ কিশোরী। তারা পেয়েছে ইতিবাচক মনোবল। রাস্তাঘাটে অসহায় পরিস্থিতিতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শিখেছে আত্মরক্ষার কৌশল। এখন তারা আর একা চলতে ভয় পায় না।
দেশের মানুষ যখন ধর্ষণ ও নারীর প্রতি নিপীড়নবিরোধী প্রতিবাদে সোচ্চার তখন স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের কারাতে প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে মাগুরার ‘পরিবর্তনে আমরাই’ নামে একটি সামাজিক সংগঠন।
সংগঠনটির সদস্যরা জানান, রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বাজে মন্তব্যের শিকার হননি এমন নারী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বাজে স্পর্শ বা ইঙ্গিত বা অন্যায়ভাবে কেউ গায়ে এসে পড়লে নিজেকে তো রক্ষা করা চাই। সেই সমস্যাকে সামনে রেখে স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের কারাতে প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।
সংগঠনের সভাপতি নাহিদুর রহমান দুর্জয় জানান, বর্তমানে দেশে নারী নির্যাতন, ইভটিজিং বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আমরা মাগুরায় প্রথমবারের মতো নারী কারাতে প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছি। নারীদের আত্মরক্ষা বৃদ্ধিতে কারাতের নানা কলা-কৌশল শেখানোর চেষ্টা করেছি।
এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী অদ্বিতীয়া আইচ, মৃধা ফারিয়া সিদ্দিকী চৈতিসহ একাধিক কিশোরী জানায়, প্রশিক্ষণের আগে তারা অনেক সময়ই একা রাস্তায় চলতে বেশ ভয় পেত। কিন্তু তিন মাস অনুশীলন ও নানা রকম কসরত চর্চা করে তাদের মাঝে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। এখন আর একা চলতে ভয় পায় না তারা। তারা এখন নিজেদের শারীরিকভাবেও অনেক বেশি সুস্থ ও সবল মনে করেন।
অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের আত্মরক্ষা ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে এ ধরণের আয়োজন দীর্ঘমেয়াদি করার দাবি জানান।
প্রশিক্ষণ শেষে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কারাতে কোচ রফিকুল ইসলাম বলেন, কারাতে প্রশিক্ষণ নিলে মেয়েদের ব্যক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি নিয়মিত চর্চা করলে তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে।
গত রোববার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে মাগুরা জেলা শহরের শেখ কামাল ইনডোর স্টেডিয়ামে দীর্ঘ প্রশিক্ষণ শেষে কারাতে প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এতে আয়োজক সংগঠনের সভাপতি নাহিদুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি প্রফেসর ড. নাসরিন আখতার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জুলিয়া সুকায়না, নারী নেত্রী মমতাজ বেগম প্রমুখ।
জালাল উদ্দিন হাককানী/আরএআর