কক্সবাজারে পর্যটক গণধর্ষণের ঘটনায় হোটেলের ব্যবস্থাপক রিমান্ডে
কক্সবাজার বেড়াতে আসা নারী পর্যটককে গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার হোটেল জিয়া গেস্ট ইনের ব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিন ছোটনের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক হামিমুন তানজিন এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে দুপুরে রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে। দীর্ঘ শুনানির পর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (২২ ডিসেম্বর) স্বামী-সন্তানকে জিম্মি ও হত্যার ভয় দেখিয়ে এক নারী পর্যটককে দুই বার দলবেঁধে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ পেয়ে রাত দেড়টার দিকে কক্সবাজারের কলাতলীর ‘জিয়া গেস্ট ইন’ নামে একটি হোটেল থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে র্যাব-১৫। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে হোটেলের ব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত তিনজনের মধ্যে দুইজনকে শনাক্তও করা হয়েছে।
ওই নারীর বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, গত বুধবার সকালে ঢাকা থেকে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজার বেড়াতে আসেন ওই নারী। এরপর কক্সবাজার শহরের হলিডে মোড়ের একটি হোটেলে ওঠেন। সেখান থেকে বিকেলে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে ঘুরতে যান। লাবণী পয়েন্টে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে ওই নারীর স্বামীর ধাক্কা লাগে। পরে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জেরে সন্ধ্যায় স্টেডিয়াম সংলগ্ন পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে কয়েকজন যুবক তার স্বামী ও ৮ মাসের সন্তানকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। অপর একটি অটোরিকশায় তিন যুবক গৃহবধূকে তুলে নেয়। পরে তারা পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে।
সেখান থেকে তাকে জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে নেওয়া হয়। সেখানেও তাকে আরেক দফা ধর্ষণ করে ওই যুবকরা। ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে হোটেল কক্ষটি বাইরে থেকে বন্ধ করে পালিয়ে যায় তারা।
ওই নারীর দাবি, তিনি জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে এক যুবকের সহায়তায় কক্ষের দরজা খুলে ৯৯৯-এ ফোন দেন। পুলিশ তাকে থানায় এসে সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেয়। তারপর অপর এক ব্যক্তির সহযোগিতায় কল দেন র্যাবকে। পরে র্যাব এসে তাকে উদ্ধার করে। পর্যটন গলফ মাঠের এলাকা থেকে তার স্বামী ও সন্তানকেও উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে ওই নারীর স্বামী বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন। কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার আশিকুল ইসলাম আশিকসহ এজাহারে চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- আশিকের দুই সহযোগী ইস্রাফিল খুদা ওরফে জয় ও মেহেদী হাসান ওরফে বাবু এবং হোটেলের ব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিন ছোটন।
আরএআর