আচরণবিধি ভঙ্গ করে নৌকায় ভোট চাইছেন এমপি বাবু
আচরণবিধি ভঙ্গ করে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ করছেন নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) নজরুল ইসলাম বাবু। আড়াইহাজারে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীদের পক্ষে গণসংযোগ ও উঠান বৈঠকে অংশ নিয়ে ভোট চাইছেন সরকারদলীয় এই এমপি।
শুধু স্থানীয় এমপিই নন, নৌকার প্রার্থীর জন্য ভোট চেয়ে গণসংযোগ করছেন আড়াইহাজারের গোপালদী পৌরসভার মেয়র হালিম শিকদার ও আড়াইহাজার পৌরসভার মেয়র সুলতান আলী। আচরণবিধি লঙ্ঘন করে এলাকার এমপি ও পৌর মেয়ররা নৌকার প্রার্থীদের পক্ষে মাঠে নামায় অপর প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা রীতিমত ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন।
প্রার্থীরা বলছেন, এ ব্যাপারে তারা নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার সাহস করছেন না।
আর নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হচ্ছে, তারা এ ব্যপারে কিছুই জানেন না এবং কেউ কোনো অভিযোগও করেননি।
আগামী ২৬ ডিসেম্বর আড়াইহাজার উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে উচিতপুরা, কালাপাহাড়িয়া, খাগকান্দা ও সাত গ্রাম ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে বাকি ৬টি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন।
জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আচরণবিধির ২২ নং ধারায় বলা আছে, সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্বাচন পূর্ব সময়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তিনি যদি এ এলাকার ভোটার হন তাহলে শুধু ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যেতে পারবেন। এছাড়াও ৩০ নং ধারায় বলা আছে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে অর্থ, অস্ত্র ও পেশীশক্তি কিংবা অস্থানীয় ক্ষমতা দ্বারা নির্বাচন প্রভাবিত করা যাবে না।
কিন্তু আড়াইহাজার এলাকায় আচরণবিধি বলতে কোনো কিছুই নেই। খোদ এমপি নজরুল ইসলাম বাবু নিজেই এই আইনের লঙ্ঘন করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপনের পক্ষে ভোট চেয়ে বিভিন্ন উঠান বৈঠকে অংশ নেন এমপি বাবু। তিনি গণসংযোগও করেন।
ওই ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাইজুল হক ডালিম বলেন, আমরা এখন অসহায় হয়ে পড়ছি। এভাবে একজন এমপি যদি নির্বাচনে সরাসরি প্রভাব বিস্তার করেন তাহলে আর নির্বাচনের থাকে কী। এর আগের দিন ২০ ডিসেম্বর দিনব্যাপী সাতগ্রাম ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী অদুদ মাহমুদের পক্ষে ভোট চান এমপি বাবু।
একই অভিযোগ করেন আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মিয়া মোহাম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, শুধু প্রভাব বিস্তারই নয় প্রচারণায় বাধা দেওয়া হচ্ছে আমাদের। আমরা যেখানে যাচ্ছি সেখানেই সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের বাধার মুখে পড়ছি।
এর আগে একই দিনে খাগকান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী আরিফুর রহমানের পক্ষে গণসংযোগ করেন ও উঠান বৈঠকে বক্তব্য দেন এমপি বাবু। এ অভিযোগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বলেন, এভাবে প্রভাব বিস্তার করলে ভোটাররা ভোট দিতেও যাবে না ভয়ে। এমনিতেই ভয়ের জনপদ এটি, তার ওপর আমরাই কেন্দ্র দখলের ভয় পাচ্ছি।
এ ব্যপারে এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও সেটি কেউ রিসিভ করেননি।
অপরদিকে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিয়ুর রহমান বলেন, আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি এবং বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজু আহমেদ/আরএআর