বিএনপির ৩৫ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পাকহানাদার বাহিনীর আক্রমণে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যখন দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন তখন মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তখন বেগম খালেদা জিয়া পালিয়ে না গিয়ে দেশেই ছিলেন। পরে ক্যান্টনমেন্টের বাসভবন থেকে খালেদা জিয়াকে আটক করে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত কারাগারে রাখে পাকসেনারা।
এজন্য খালেদা জিয়াকে দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা বলেছি। সেইদিন যদি তিনি এই কাজটি না করতেন তাহলে যুদ্ধের মোড় ঘুরে যেতে পারতো। সেই খালেদা জিয়াকে বিনা অপরাধে জেলে আটক রাখা হয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। বারবার চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে বললেও সরকার কোনো কর্ণপাত করছে না।
বুধবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল জেলা সদর স্কুল মাঠে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা বারবার বলেছি মানবিক কারণে বাধা দেবেন না, কিন্তু সরকার শুনছে না। এ ব্যাপারে বারবার আইন দেখান আইনমন্ত্রী। অথচ তারা নিজেরাই বেআইনিভাবে ক্ষমতায় রয়েছে। আগের রাতে নির্বাচন করে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে গত ১৪ বছর ধরে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। তারা দেশটাকে একটা আস্তাকুঁড়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সব ধ্বংস করে দিয়েছে তারা। টাঙ্গাইলের আব্দুস সালাম পিন্টুকেও মিথ্যা মামলায় কারাগারে রাখা হয়েছে। আমাদের দলের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যতক্ষণ পর্যন্ত ক্ষমতায় আছে ততক্ষণ নির্বাচন কমিশন গঠন করে লাভ হবে না। সরকার তো নিজেই নির্বাচনী ব্যবস্থাপনাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। নির্বাচনের সময় নিরপেক্ষ সরকার না থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। সব নির্বাচনে সরকার দলীয়রা জোর করে জিতছে। এই সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ না দিলে এর দায় সরকারকে নিতে হবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান, কেন্দ্রীয় বিএনপির পল্লী উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুর রহমান মিলন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী, বিএনপির শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু। প্রায় ১৫ বছর পর টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলো। সমাবেশে জেলার বিভিন্ন উপজেলার নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
অভিজিৎ ঘোষ/আরএআর