সারাদেশে নানা আয়োজনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন
আজ ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। আজ পূর্ণ হয়েছে বিজয়ের ৫০ বছরও। এ দুটি উপলক্ষের সঙ্গে জাতি উদযাপন করছে মুুজিব শতবর্ষও। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এবং যথাযোগ্য মর্যাদায় সারা দেশে পালিত হচ্ছে এবারের বিশেষ বিজয় দিবস। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
রাজশাহী
রাজশাহীজুড়ে নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে মহান বিজয় দিবস। বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই শুরু হয়েছে দিবসের আনুষ্ঠানিকতা। যাদের আত্মত্যাগে এই বিজয়, তাদের শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে আসেন রাজশাহীর সর্বস্তরের মানুষ। ফুলে ফুলে ভরে যায় শহীদ মিনারের বেদি।
সকালে রাজশাহীর সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন হয়। জেলা পুলিশ লাইন্সে তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির কার্যক্রম শুরু হয়। স্বাধীনতার ৫০ বছরে তোপধ্বনি হয়েছে এবার ৫০ বার।
সকাল ৭টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিভাগীয় কমিশনার ড. হুমায়ুন কবীর। পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল বাতেন, রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক, জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল, জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেনসহ সরকারি বিভিন্ন দফতরের পক্ষ থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
নীলফামারী
বিনম্র শ্রদ্ধা ও যথাযোগ্য মর্যাদায় নীলফামারীতে মহান বিজয় দিবস ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে ৫০ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সূর্যোদয়ের শুরুতে শহরের কেন্দ্রীয় স্মৃতি স্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা পরিষদ, নীলফামারী পৌরসভা, জেলা আওয়ামী লীগ, নীলফামারী প্রেসক্লাব, বিএনপি, স্বাস্থ্য বিভাগ, সমবায় দফতর, যুব উন্নয়ন অধিদফত, জাগরণ যুব সংঘ, জাগরণ কৃষি সমবায় সমিতি লিমিটেডসহ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে।
কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামে নানা আয়োজনে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপিত হচ্ছে বাংলাদেশের ৫০তম মহান বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।
দিবসটি উপলক্ষে সুর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ৫০বার তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জেলা শহরের কলেজ মোড়স্থ স্বাধীনতার বিজয়স্তম্ভে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, জেলা আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম, পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাফর আলী, সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, পৌর মেয়র কাজিউল ইসলাম, প্রেসক্লাব সভাপতি অ্যাডভোকেট আহসান হাবীব নীলু প্রমুখ।
বাগেরহাট
বাগেরহাটে নানা আয়োজনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবস পালিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে বাগেরহাট শহরের দশানী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিনটির শুভ সূচনা হয়। প্রথমে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। পরে পুলিশ সুপারসহ সরকারি প্রতিষ্ঠান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
এ সময় বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. আজিজুর রহমান, পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হকসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মাদারীপুর
পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপযাপন করছে মাদারীপুর জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, জেলার বিচার বিভাগ, জেলা আওয়ামী লীগসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বৃহস্পতিবার সকালে মাদারীপুর পুলিশ লাইন্স মাঠে ভোর ৬টায় ৫০বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিনের কার্যক্রম শুরু হয়।
সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জেলা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলণ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের প্রতিকৃর্তিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে একটি আনন্দ মিছিল বের হয়ে জেলা স্টেডিয়ামে গিয়ে নানা কর্মসূচিতে অংশ নেয়। পরে জেলা প্রশাসন মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধণা দেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন, পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুনির চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে, সদর উপজেলা চেযারম্যান ওবায়দুর রহমান খান, পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।
সাতক্ষীরা
বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সাতক্ষীরায় যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে মহান বিজয় দিবস। দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে বৃহস্পতিবার প্রত্যুষে ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির শুভ সূচনা করা হয়। সাতক্ষীরা শহরের খুলনা রোড মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন জেলা প্রশাসন ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এর আগে স্টেডিয়ামে সকালে মহান বিজয় দিসের উদ্বোধন করেন, জেলা প্রশাসক মো. হুমায়ুন কবির। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান, পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, প্রেসক্লাব সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপীসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ।
রাজবাড়ী
যথাযোগ্য মর্যাদায় রাজবাড়ীতে পালিত হলো ৫০তম বিজয় দিবস। মহান এই দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে সারাদেশের ন্যায় রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয় ব্যাপক কর্মসূচী। রাজবাড়ী পুলিশ লাইনে ভোরে ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের সুচনা হয়। এরপর সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, স্মৃতি ফলক, বধ্যভূমি ও মুক্তিযোদ্ধাদের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ, জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচীর সূচনা করা হয়।
এ সময় রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুল হাকিম, জেলা প্রশাসক (ডিসি) দিলসাদ বেগম, পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আব্দুল জব্বার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মহসিন উদ্দিন বতু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সিলেট
বিজয়ের এই দিনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভিড় করেন অসংখ্য মানুষ। সূর্যের আলো উঠতেই বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শহীদদের প্রতি। এ সময় হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চৌহাট্টা।
শহীদ মিনার বেদিতে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে প্রথমে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করে শহীদ মিনার বাস্তবায়ন পরিষদ। পরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার, উপ মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি), মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, এসপি আরআরএফ কমান্ডেন্ট, এসপি এপিবিএন। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, জেলা ও মহানগর বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজ তান্ত্রিকদল জাসদ, বাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, সাম্যবাদী দল, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, সিলেট প্রেসক্লাব, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, সিলেট চেম্বার অব কমার্স, সড়ক বিভাগ, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফ্রন্ট সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন একে একে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
ময়মনসিংহ
বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীকে স্মরণীয় করে রাখতে সাইকেল শোভাযাত্রার আয়োজন করে ময়মনসিংহ সিটি সাইক্লিস্ট। যেখানে দেশের পতাকা আর লাল-সবুজের টিশার্ট পরে অংশ নেয় দেড় শতাধিক তরুণ-তরুণী।
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীর শিল্পাচার্য জয়নুল উদ্যানের বৈশাখী মঞ্চের সামনে এ শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু। পরে শোভাযাত্রাটি টাউন হল মোড়, নতুন বাজার, চরপাড়া ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাইপাস মোড় হয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়ে শেষ হয়।
শোভাযাত্রার উদ্বোধনী আয়োজনে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ময়মনসিংহ শাখার মহাব্যবস্থাপক জামিল আহমেদ, ময়মনসিংহ সিটি সাইক্লিস্টের উপদেষ্টা আলী ইউসুফ, ময়মনসিংহ স্টান্ট বয়েজের সমন্বয়ক শাহরিয়ার জামান নাইম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ভোলা
শহীদের রক্ত বৃথা যেতে না দেওয়ার শপথ নিল ভোলার হাজার মানুষ। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ভোলার গজনবী স্টেডিয়ামে জেলার হাজারো নারী-পুরুষ, শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী দেশগঠনে এই শপথ নিয়েছে।
শপথে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মমিন টুলু, পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম, সিভিল সার্জন এ কে এম শফিকুজ্জামান, ভোলা সদর উপজেলার চেয়ারম্যান মো. মোশারেফ হোসেন প্রমুখ।
আরআই