ধর্ষণ মামলার প্রতিশোধ নিতে লঞ্চের কেবিনে স্ত্রীকে হত্যা
কুয়াকাটা-২ লঞ্চে নিহত শারমিনের হত্যাকারীর পরিচয় পেয়েছে পুলিশ। তার স্বামীই তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনরা। অভিযুক্ত স্বামী মাসুদ হাওলাদারকে গ্রেফতার করতে পারলে হত্যাকাণ্ডের রহস্য বের হবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল সদর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসনাত জামান।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা মামলা করবেন।
পুলিশ জানিয়েছে, শারমিন আক্তার বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তার স্বামী মাসুদ হাওলাদারের সঙ্গে কুয়াকাটা লঞ্চে উঠে নিচতলার একটি স্টাফ কেবিন ভাড়া নেন। সকালে শারমিন আক্তারের মরদেহ পাওয়া গেলেও মাসুদ হাওলাদার পলাতক রয়েছেন। মাসুদ হাওলাদারের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার পশ্চিম গোপালপুর গ্রামের জলির হাওলাদারের ছেলে।
নিহত শারমিন আক্তারের মামা মকবুল হোসেন জানান, শারমিন বরিশাল নগরীর এয়ারপোর্ট থানার উত্তর রাফিয়াদি গ্রামের এনায়েত হোসেন ও নুরুন নাহারের মেয়ে। চার বোনের মধ্যে সবার বড় ছিল শারমিন। বাবার আর্থিক অনটনের কারণে কয়েক বছর আগে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি নেন শারমিন। সেখানে পরিচয় হয় নলছিটির বাসিন্দা মাসুদ হাওলাদারের সঙ্গে। একই গার্মেন্টসে কাজ করতে গিয়ে প্রেম করে প্রথমে নোটারির মাধ্যমে দুজনে বিয়ে করেন। কিন্তু শারমিনের জমানো টাকা নেওয়ার পর তাকে ছেড়ে যান মাসুদ। চলতি বছর তার বিরুদ্ধে বরিশাল আদালতে ধর্ষণ মামলা করা হয়। পুলিশ তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়। তখন শারমিনের অভিভাবককে ধরে মাসুদ পুনরায় শারমিনকে মেনে নিয়ে আদালত থেকে মামলা তুলে নেওয়ায়।
মকবুল হোসেন বলেন, মাসুদের মনে যে এসব ছিল তা বুঝতে পারিনি। তাহলে আমার ভাগনিকে ওর সঙ্গে দিতাম না। ৬-৭ মাস আগে দুজনে ঢাকা গিয়ে কুনিপাড়ার একই বাসায় ওঠে। এর আগেও দুজনের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝামেলা, মারামারি হয়েছে। মাসুদ বিভিন্ন সময়ে যৌতুকও চেয়েছে। তা নিয়েও সালিস হয়েছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার আমার ভাগনিকে বাড়িতে নিয়ে আসার কথা বলে লঞ্চের কেবিনে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে সে। কারণ তার বিরুদ্ধে শারমিন ধর্ষণ মামলা করেছিল। সেই মামলার প্রতিশোধ নিতে শারমিনকে হত্যা করেছে মাসুদ। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর