৪ ছাত্রকে অপহরণ করে দুই রোহিঙ্গা, মেলেনি খোঁজ
কক্সবাজারের রামু উপজেলার পেচারদ্বীপের মংলাপাড়া এলাকার চার স্কুলছাত্র অপহরণের ৪৮ ঘণ্টা পরও তাদের উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে মুক্তিপণ দিতে ওই স্কুলছাত্রদের পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছে অপহরণকারীরা।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে জাহাঙ্গীর ও ইব্রাহীম চার স্কুলছাত্রকে সেন্টমার্টিন বেড়াতে নেওয়ার কথা বলে টেকনাফের হোয়াইক্যং এলাকায় নিয়ে যান। মূলত ইব্রাহীম ও জাহাঙ্গীর দুইজনই রোহিঙ্গা ছিল।
সেখানে বেড়াতে যাওয়ার পর থেকে ওই চারজনের খোঁজ মিলছে না। নিখোঁজের পর ৮ ডিসেম্বর বুধবার স্বজনদের কাছে বিভিন্ন অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন করে তাদের মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি করা হচ্ছে। অন্যথায় তাদের লাশ ফেরত দেওয়া হবে বলেও হুমকি দিচ্ছেন তারা।
অপহৃতরা হলেন রামুর পেচারদ্বীপের মংলাপাড়া এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে মোহাম্মদ কায়সার (১৪), একই এলাকার মোহাম্মদ আলমের ছেলে মিজানুর রহমান নয়ন (১৪), আব্দুস সালামের ছেলে জাহেদুল ইসলাম (১৫) ও ফরিদুল আলমের ছেলে মিজানুর রহমান (১৪)। তাদের মধ্যে জাহেদুল ইসলাম সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণি ও বাকিরা অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র।
অপহৃত কিশোর জাহেদুলের মা খোলশিদা বেগম বলেন, শুধুই বলছে টাকা লাগবে। বন্ধুত্ব হওয়ার পর ফাঁদ পেতে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু টাকা দিব বললেও ফোন কেটে দিচ্ছে। এত নিষ্ঠুরভাবে কথা বলছে। আমি কি ছেলেকে আর ফিরে পাব না?
রামু থানায় দেওয়া অভিযোগ থেকে জানা যায়, পেচারদ্বীপ এলাকার কটেজ বাতিঘরের কর্মচারী জাহাঙ্গীর আলম ও ইব্রাহীমের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল স্থানীয় ওই চার স্কুলছাত্রের। সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে তাদের টেকনাফের হোয়াইক্যং এলাকায় নিয়ে যান দুই কর্মচারী।
অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, কটেজ কর্মচারী ইব্রাহীম ও জাহাঙ্গীর দুজনই রোহিঙ্গা। তাদের মধ্যে জাহাঙ্গীর টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ২৬ নম্বর ব্লকের মোহাম্মদ কাছিমের ছেলে। তার সহযোগী মোহাম্মদ ইব্রাহীমের বাড়িও সেখানে।
কিশোর জাহেদুলের বাবা আব্দুস সালাম বলেন, বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে নিয়ে গেছে ওই দুজন। যাওয়ার পর কখন বাড়ি ফিরছে খোঁজখবর নিতে ফোন দিলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এছাড়া জাহাঙ্গীর ও ইব্রাহীমের মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। পরে বুধবার দুপুরে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী পরিচয়ে মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি করছে।’
এ ঘটনায় রামু থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রামু থানা পুলিশ বলছে যেহেতু বিষয়টি টেকনাফ থানায়, তাই তারা সেখানে অভিযোগটা দিতে বলেছেন। পাশাপাশি তারাও তাদের অবস্থান থেকে চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন।’
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরুপ কুমার চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে জানান, ঘটনাটি টেকনাফ থানা এলাকায় পড়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্তে তাদের সহযোগিতা করব।
এমএসআর