অপহরণের পর বিয়ে, সেই কলেজছাত্র কারাগারে
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে কলেজছাত্রকে জোরপূর্বক বিয়ে করা আলোচিত সেই যুবক নাজমুল হাসানকে স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুক মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে পটুয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আশিকুর রহমান আসামি নাজমুলকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এর আগে ইসরাত জাহান পাখির দায়ের করা মামলায় সোমবার দুপুরে নাজমুল ও তার বাবা মাতা আদালতে হাজির হন।
ভুক্তভোগী ইশরাত জাহান পাখির আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ জানান, কলেজছাত্র নাজমুল হাসানের সঙ্গে ইসরাত জাহান পাখির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তাদের দুজনের সম্মতিতে বিয়ে হয়। এরপর তারা সংসার করেন। গত ২৭ সেপ্টেম্বর বেলা ১টা ৩০ মিনিটে ঢাকার একটি কাজী অফিসে নাজমুল এবং পাখির বিবাহের কাবিন হয়। সেখানে কাবিনে মোহরানার টাকা নিয়ে একটি জটিলতা তৈরি হয় এবং ওই সময়ের একটি ভিডিও প্রকাশ করে দাবি করা হয় পাখি নাজমুলকে জোরপূর্বক বিয়ে করেছে।
গত ৩ অক্টোবর পাখির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন নাজমুল। সেখানে দাবি করা হয় ২৭ সেপ্টেম্বর নাজমুলকে পটুয়াখালী লঞ্চঘাট থেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুর দেড়টায় নাজমুল ঢাকায় কাজী অফিসে অবস্থান করছিল। একটি মানুষ একই দিনে দুই স্থানে থাকতে পারে না।
আসামি নাজমুল ইসরাত জাহান পাখির কাছে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিল। ইসরাত জাহান পাখি যৌতুক প্রদান না করায় পাখির বিরুদ্ধে জোরপূর্বক বিয়ে করার অভিযোগ তোলা হয়। সোমবার আদালতে এ সম্পর্কিত দালিলিক তথ্যাদি উপস্থাপন করা হয়েছে। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে আসামি নাজমুল হাসানকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেয়।
গত ৯ অক্টোবর ইসরাত জাহান পাখি নাজমুল হাসান, তার বাবা এবং মাকে আসামি করে পটুয়াখালী আদালতে যৌতুকের মামলাটি দায়ের করেছিল। অপরদিকে, নাজমুল ৩ অক্টোবর পাখির বিরুদ্ধে জোরপূর্বক বিয়ে করার অভিযোগ এনে পটুয়াখালী আদালতে মামলা করেন। নাজমুলের দায়ের করা মামলাটি পুলিশ তদন্ত করছে।
আদালতে নাজমুলের আইনজীবী হিসেবে ছিলেন আবদুল্লাহ আল নোমান। নাজমুল পটুয়াখালী সরকারি কলেজের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তিনি কলেজের আবাসিক হোস্টেলে থাকেন। নাজমুল এবং পাখি দুজনার বাড়ি জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলায়।
মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এমএএস