পানির ট্যাংক পেয়ে খুশি উপকূলের ১১০ পরিবার
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে পানি সংরক্ষণের জন্য ১১০টি ট্যাংক বিতরণ করা হয়েছে। শনিবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপকূলীয় বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়নের দাতিনাখালি বালুরমাঠে এক হাজার লিটার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এ ট্যাংক বিতরণ করা হয়।
সুন্দরবন উপকূলের শতাধিক প্রান্তিক পরিবারের মাঝে ট্যাংক বিতরণ করে চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত সামাজিক সেবামূলক সংগঠন ডু সামথিং ফাউন্ডেশন। এ সময় ফাউন্ডেশনের কোষাধ্যক্ষ মো. জাকির হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক শাহিন আলম, মাহমুদুল হাসান, বুলবুল, মামুন, মাসুমসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সিগঞ্জ, কৈখালী, রমজাননগর, আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ও খুলনার কয়রা পয়েন্টের ১১০টি প্রান্তিক পরিবারের মাঝে পানির ট্যাংক বিতরণ করা হয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী গ্রামের বাসিন্দা রিজিয়া বেগম। এখন বয়সের ভারে খুব বেশি চলাফেরা করতে পারেন না তিনি। তবে বেঁচে থাকার তাগিদে প্রতিদিন কয়েক কিলোমিটার হেঁটে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হয় তাকে।
রিজিয়া বেগম জানান, দিনে দু-তিনবার অনেক দূর হেঁটে পানি আনতে হয়। মাজায় আর পারে না বাবা। কোনো ছেলে সন্তান নেই আমার। পানির পাত্র না থাকায় বৃষ্টির সময় পানি ধরে রাখতে পারিনি। পানির ট্যাংকটি পেয়ে আমার খুব উপকার হবে। কষ্ট অনেকটা কমবে। রিজিয়ার মতো এমন অনুভূতি প্রায় সবারই।
ডু সামর্থিং ফাউন্ডেশনের কোষাধ্যক্ষ মো. জাকির হোসেন বলেন, চারদিকে পানি কিন্তু পান করার মতো পানি নেই। সুন্দরবন তীরবর্তী সাতক্ষীরার মানুষের এই অবস্থা আমাদের মনে ব্যাপক নাড়া দেয়। তাই আমরা এই অসহনীয় কষ্ট থেকে মানুষকে কিছুটা মুক্তির জন্য হাতে পানির ট্যাংক তুলে দিয়েছি।
তিনি বলেন, সুন্দরবন উপকূলে খাবার পানির সংকট নৈমিত্তিক। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যের কারণে এই সংকট আরও বহুগুণ বেড়ে গেছে। বর্ষা মৌসুমে পানি সংরক্ষণ করে রাখলে বৃষ্টি মৌসুম শেষে কয়েক মাস সেই পানিতে চলে যায়। অসচ্ছল পরিবারগুলো পাত্রের অভাবে বর্ষা মৌসুমে পানি সংরক্ষণ করতে পারে না। মাটির কলস, ছোটখাটো পাত্র, কিংবা মাটির গর্তে পলিথিন দিয়ে সামান্য সংরক্ষণ করে রাখেন।
আকরামুল ইসলাম/এসপি