নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন: ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেন দেলুসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক উৎপল চৌধুরীর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল ও পিবিআই নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান মুন্সী।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই নোয়াখালীর পরিদর্শক মামুনুর রশিদ পাটোয়ারি জানান, এ মামলায় ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। আসামিরা হলেন- মো. দেলোয়ার হোসেন দেলু, জামাল উদ্দিন, নুর হোসেন বাদল, মো. আবদুর রহিম, মো. আবদুর রহিম, মো. আলী ওরফে আবু কালাম, ইস্রাফিল হোসেন, মাঈন উদ্দিন সাজু, সামছুদ্দিন সুমন, আবদুর রব ওরফে চৌধুরী মিয়া, আরিফ, নুর হোসেন রাসেল, আনোয়ার হোসেন সোহাগ, তারেক ও ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ।
এ মামলায় আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন আটজন। এ মামলা থেকে রহমত উল্যা ও মাঈন উদ্দিন সাহেদকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আর পলাতক রয়েছেন চারজন। তারা হলেন- জামাল উদ্দিন ওরফে প্রবাসী জামাল, আবদুর রব চৌধুরী, মিজানুর রহমান তারেক ও মোস্তাফিজুর রহমান আরিফ।
বিবস্ত্র করে নারী নির্যাতন মামলার ৪৮ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করল পিবিআই।
অন্যদিকে ধর্ষণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই নোয়াখালীর পরিদর্শক সিরাজুল মোস্তফা জানান, ধর্ষণ মামলায় দুইজনকে আসামি করে চার্জশিট দিয়েছে পিবিআই। আসামিরা হলেন- মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. আলী ওরফে আবু কালাম। এ মামলায় মো. আলী ওরফে আবু কালাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ধর্ষণ মামলাটি ৪০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে চার্জশিট দিল পিবিআই।
প্রসঙ্গত, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই নারীর আগের স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে তার বাবার বাড়ি বেগমগঞ্জে একলাসপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে তার ঘরে যান। বিষয়টি দেখতে পেয়ে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার রাত ১০টার দিকে লোকজন নিয়ে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করেন। এ সময় তাদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর শুরু করেন তারা। একপর্যায়ে পিটিয়ে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেন তারা। ৪ অক্টোবর দুপুরে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। ওই ঘটনার পর নির্যাতনের শিকার ওই নারী বাদী হয়ে নারী নির্যাতন আইন ও পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মোট তিনটি মামলা করেন।
আরএআর