আগে ভিক্ষা করতাম, এহন গাড়ির মালিক
‘আগে মোগো কিচ্চু আলহে (ছিল) না। এহন একটা ভ্যান দেছে। ভ্যানডার অনেক দাম। ভ্যান চালাইয়া, তরি-তরকারি বেইচ্চা এহন ভালো থাহার চেষ্টা হরমু।’ কথাগুলো বলছিলেন সুজন ফকির। তিনি বলেন, ‘আগে ভিক্ষা করতাম, এহন গাড়ির মালিক।’
আরেক বৃদ্ধ আব্দুল মজিদ পেয়েছেন ফলের দোকান চালানোর উপকরণ। বেগম এখন একটি উন্নত জাতের ছাগলের মালিক। সেলাই মেশিন চালাতে জানতেন বলে আলেয়া বেগমের পছন্দমতো দেওয়া হয়েছে সেলাই মেশিন।
এমন আরও ৪০ জনের অভিব্যক্তি ছিল এমন উচ্ছ্বাসে ভরা। ৪৪ জনের সবাই আগে ভিক্ষা করতেন। সকালে কিছু খেলে দুপুরে খাওয়ার সংস্থান ছিল না। এখনো নেই ঘুমানোর একটুকু ঠাঁই। সমাজসেবা অধিদফতর ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এখন কাজ করে খাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে তাদের।
বুধবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে জেলার বিভিন্ন এলাকার ৪৪ জন ভিক্ষুককে সেলাই মেশিন, ভ্যান গাড়ি, গবাদিপশু, ক্ষুদ্র ব্যবসার পণ্য উপহার দেওয়া হয়।
পুনর্বাসিত ৪৪ জনের মধ্যে ১৪ জন নতুন ভ্যান গাড়ি, ১৪ জনকে চা-মুদি দোকানের মালামাল সামগ্রী, ২ জনকে ছাগল, ২ জনকে সেলাই মেশিন, ২ জনকে ফল বিক্রয় সামগ্রী, ৭ জনকে সেলাই কাজের উপকরণ, ৩ জনকে কাপড় ব্যবসার উপকরণ বিতরণ করা হয়।
উপহারপ্রাপ্তদের মধ্যে ২২ জন নারী ও ২২ জন পুরুষ। যাদের মধ্যে ৮ জন শারীরিক প্রতিবন্ধী। এ ছাড়া প্রত্যেককে ৩০০ টাকা করে প্রদান করা হয়।
বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, জেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত করার জন্য আমরা কাজ করছি। এই কাজে শুধু জেলা প্রশাসন বা সমাজসেবা অধিদফতর এগিয়ে এলেই হবে না। সবাকে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি যারা ভিক্ষা করছেন, তাদেরও কাজ করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। জেলা প্রশাসন সব সময় অসহায় মানুষের পাশে আছে।
উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক এ কে এম আক্তারুজ্জামান, জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক আল-মামুন তালুকদার, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার নাজমূল হুদা, সুব্রত বিশ্বাস দাস, সমাজসেবা অধিদফতরের প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শারমিন সুলতানা প্রমুখ।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এনএ