শরীয়তপুরে সমর্থন করায় বাড়িতে হামলা, আহত ১০
শরীয়তপুর সদর উপজেলার তুলাশার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িতে হামাল করার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জামাল হোসাইনের সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উপরগাঁও হাছেন দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পাশে ভোর সাড়ে ৬টায় দিকে হামলা হয়। এ সময় দুজন ইউপি সদস্য প্রার্থীর বাড়িসহ ১০টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
হামলায় আহতরা হলেন ইউপি সদস্য প্রার্থী মোশারফ দেওয়ানের স্ত্রী শারমিন আক্তার, কুলসুম বেগম, আকাশি, পারু বেগম, মোকলেস ব্যাপারি, ইদ্রিস ব্যাপারি, আমেনা বেগম, খতেজা বেগম।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে জামাল হোসাইনের সমর্থকরা ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উপরগাঁও হাছেন দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পাশে ইউপি সদস্য প্রার্থী মোশারফ দেওয়ান ও মান্নান দেওয়ানের বাড়িতে হামলা করেন। হামলায় মোশারফ দেওয়ানের স্ত্রীসহ ১০ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ সময় ৮টি বসতঘর ও দুটি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। সদস্য প্রার্থী মোশারফ দেওয়ানের, আমীর হোসেন দেওয়ানের ও মান্নান দেওয়ানের দোকান লুট করা হয়েছে। মান্নান দেওয়ান বলেন, নৌকার সমর্থকরা আমার দোকান ভাঙচুর করে এক লাখ টাকার মালামল লুট করে নিয়ে গেছে।
মোশারফ দেওয়ান বলেন, জনগণের ভোটে আমি নির্বাচিত হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছি। এবারও আমি ৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হয়েছি। আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদুল ইসলামকে সমর্থন করার কারণে আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ভোটের দিন যাতে কেন্দ্র যেতে না পারি, তার জন্য আমার ও পরিবারের ৮টি বাড়িতে হমলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। খবর দেওয়ার পরও পুলিশ আসছিল না।
তিনি বলেন, দেড় ঘণ্টা হামলা চালানোর পর র্যাব ও পুলিশ এসেছে। ততক্ষণে আমাদের সব শেষ। আমার ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোটাররা যাতে কেন্দ্র না আসে, তার জন্য নৌকার প্রার্থী জামাল হোসাইনের লোকজন রাস্তায় অবস্থান নিয়েছে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জামাল হোসাইন বলেন, সকালে জাহিদুল ইসলামের সমর্থকরা আমার এক কর্মীকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। আমার সমর্থকদের শান্ত থাকতে বলেছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে দুপক্ষই উত্তেজনা ছড়ায়।
স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে যেতে না পারে, তার জন্য হামলা করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বাধা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশকে জানালেও তারা সহযোগিতা করছেন না।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আক্তার হোসেন মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, কেন্দ্রের পাশের সদস্য প্রার্থীর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য যারা ছিলেন, তারা কেন্দ্র রক্ষা করেছেন। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। সুষ্ঠুভাবে ভোট হচ্ছে। আর ওই হামলার ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
জেলা নির্বাচন ককর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। র্যাব ও বিজিবি টহলে রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৫ জন পুলিশসহ ১৭ জন আনসার সদস্য রয়েছেন।
উল্লেখ্য, শরীয়তপুরে সদর ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ চলছে। যার মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩০ জন, ২৭৬ সাধারণ সদস্য ও ৮৬ সংরক্ষিত আসনের পক্ষে ভোট গ্রহণ হচ্ছে। এতে ১ লাখ ১৬ হাজার ৭২২ জন ভোটার ভোট প্রদান করবেন।
উপজেলার বিনোদপুর ও চন্দ্রপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ওই ইউনিয়ন দুটিতে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ভোট গ্রহণ চলছে।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এনএ