রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংঘর্ষ নয়, ব্রাশফায়ার করে দুর্বৃত্তরা
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হামলায় ৬ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১১ জন। প্রথমে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ বলা হলেও পরে জানা গেছে ৮ থেকে ১০ জনের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় প্রথমে পুলিশের পক্ষ থেকে ৭ জন নিহতের কথা বলা হলেও পরে ছয়জনের কথা নিশ্চিত করা হয়।
শুক্রবার (২২ অক্টোবর) ভোরে ফজরের নামাজের সময় উখিয়ার ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অস্ত্রসহ মুজিবুর রহমান নামে একজনকে আটক করেছেন ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা।
নিহতরা হলেন উখিয়ার বালুখালী-২ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইদ্রিস আলী (৩২), বালুখালী-১ এর ইব্রাহীম হোসেন (২২), ১৮ নম্বর ক্যাম্পের এইচ ব্লকের বাসিন্দা নুরুল ইসলামের ছেলে আজিজুল হক (২৬), আবুল হোসেনের ছেলে মো. আমীন (৩২), মোহাম্মদ নবীর ছেলে নুরুল আলম ওরফে হালিম (৪৫) এবং রহিম উল্লার ছেলে হামিদ উল্লাহ (৫৫)।
একাধিক নির্ভযোগ্য সূত্র ও এপিবিএন জানায়, শুক্রবার ভোর ৪টা ১৫ মিনিটের দিকে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৮ এর দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামীয়া মাদ্রাসার মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর অতর্কিত গুলিবর্ষণ এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় ৮/১০ জনের একটি সশস্ত্র গ্রুপ। চারদিক থেকে গুলিবর্ষণ হওয়ায় কেউ মসজিদ থেকে বের হতে পারেননি। এতে ঘটনাস্থলে চারজন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও দুজনের মৃত্যু হয়।
১৮ নং ক্যাম্পের মাঝি আব্দুল মতলব ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘুম থেকে উঠে মসজিদের দিকে যাচ্ছিলাম। যেতে যেতে কানে আসছিল গুলির আওয়াজ। একপর্যায়ে সবাই বসতঘর থেকে বের হয়ে ছুটাছুটি করছিল। আমিও পেছনের দিকে চলে আসি। পরে গিয়ে দেখলাম সেখানে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন অনেকে। যারা মূলত নামাজরত ছিল। কে বা কারা হামলা করেছে তাদের আমরা চিনতে পারিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৮ এপিবিএনের ময়নারঘোনা ক্যাম্পের এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাদ্রাসা ও মসজিদের চারদিকের অংশে শুধু গুলির চিহ্ন। আর দা দিয়ে কুপিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে টিনের শেড। আমরা ঘটনাস্থলে অনেক মুসল্লির কর্তনকৃত আঙ্গুলের অংশও পেয়েছি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) ঢাকা পোস্টকে বলেন, কী কারণে এ হামলা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। অস্ত্রসহ একজনকে আটক করেছি। ৬ জন নিহত হয়েছেন। আরও ১১ জনকে আহত অবস্থায় এমএসএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, অতর্কিত হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম পাঠানো হয়। তবে কারা এ হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তা স্পষ্ট নয়। আমরা তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। ৬ জনের মরদেহ পুলিশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। সেখানে তাদের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
হিববুল্লাহ মুহিব/এমএসআর/জেএস