ব্যস্ত সময় পার করছেন মহালছড়ির জেলেরা
চার মাস বন্ধ থাকার পর কাপ্তাই লেকে আবারও মাছ ধরা শুরু হয়েছে। ফলে ব্যস্ত সময় পার করছেন মহালছড়ির জেলেরা। সকাল থেকে শুরু করে সন্ধা পর্যন্ত চলে তাদের কর্মযজ্ঞ। এতে সংসারে সচ্ছলতা ফিরতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে কাপ্তাই লেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ১৬০০ জেলে। মাছ ধরায় তাদের পেশা। এর বাইরে তারা আর কোনো কাজ করেন না।
প্রতি বছর প্রজনন মৌসুমে তিন মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকে। তবে এবার প্রাকৃতিক কারণে চার মাস মাছ ধরা বন্ধ ছিল। ফলে সংসার চালাতে জেলেদের ঋণ নিতে হয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞা শেষে মাছ ধরা শুরু হওয়ায় জেলে পাড়ায় বেড়েছে কর্মব্যস্ততা।
জেলে মো. খোকন জানান, মাছ ধরা বন্ধ থাকলে আমাদের খুব কষ্টে থাকতে হয়। ঋণ নিয়ে সংসার চালাতে হয়। কিন্তু এখন মাছ ধরে নিজের পরিবার চালানোর পাশাপাশি ঋণও পরিশোধ করতে পারছি। যতদিন মাছ ধরতে পারব ততদিন পরিবার নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হবে না।
কাপ্তাই লেকে মাছ ধরেন ইসলাম উদ্দীন। তিনি বলেন, আমরা মাছ বিক্রি করে সংসার চালাই। কিন্তু প্রজনন মৌসুমে আমাদের সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়। ওই সময় আয়-রোজগার থাকে না। পুরো বছর যা আয় হয় তা থেকে কিছু অংশ রাখলেও বন্ধের সময় চলতে পারি না। ঋণ নিয়ে চলতে হয়। পরবর্তীতে এগুলো পরিশোধ করতে গিয়ে আর টাকা জমাতে পারি না।
মহালছড়ি মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. ফরিদ বলেন, প্রজনন মৌসুমে লেকে মাছ ধরা বন্ধ ছিল তিন মাস। প্রাকৃতিক কারণে পানি না হওয়ায় আরও এক মাস বেশি বন্ধ ছিল। খুব কষ্টে জীবন পার করেছে জেলেরা। এক মাস আগে মাছ ধরা শুরু হয়েছে। ফলে জেলেদের কর্মব্যস্ততা বেড়েছে।
মহালছড়ি কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্রের প্রধান মো. নাসরুল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রজনন মৌসুমে চার মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকার পর সময়মতো জেলেরা লেকে নেমেছে। এক মাস ধরে তারা মাছ ধরা শুরু করেছে। পুরো মাসে সরকারি রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ২২ লাখ টাকা। আগামী প্রজনন মৌসুম আসা পর্যন্ত লেকে মাছ ধরা অব্যাহত থাকবে। এ সময়ে জেলেদের কষ্ট করে সংসার চালাতে হবে না। মাছ বিক্রির টাকা দিয়ে চলবে তাদের পরিবার।
জাফর সবুজ/এসপি