এই কলেজ মাঠে আমি বক্তব্য দিচ্ছি, আমি লজ্জিত
'বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রত্যক্ষ বিরোধিতা করেছেন মশিউর রহমান যাদু মিয়া। আর আজ যাদু মিয়ার নামে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজ মাঠে আমি বক্তব্য দিচ্ছি, আমি লজ্জিত! আমি জানি না শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই খবর জানে কি না? যদি কলেজ কর্তৃপক্ষ আবেদন করে থাকে, অবহিত করে থাকে, তারপরও তারা (শিক্ষা মন্ত্রণালয়) ঘুমায় কী করে? সেটা আমি বুঝতে পারি না।'
মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে নীলফামারীর মশিউর রহমান কলেজ মাঠে নীলফামারী সদর ও সৈয়দপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, এটা হতে পারে না। যারা মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ বিরোধিতা করেছে, তাদের নামে প্রতিষ্ঠান থাকবে আর আমার সন্তান সেখানে পড়তে যাবে, এ হয় না। ডাবল স্ট্যান্ডার্ড হয় না। এক রাস্তায় থাকতে হবে।
সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী মোজাম্মেল বলেন, যাদু মিয়া মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ভারতে গিয়ে মওলানা ভাসানী সাহেবকে বলেছিলেন, পাকিস্তান ভাঙা যাবে না, নতুন রাষ্ট্র করা যাবে না। মওলানা ভাসানী ছিলেন একজন তেজস্বী নেতা, জনগণের পক্ষের লোক ছিলেন; তিনি যাদু মিয়াকে ঘাড় ধরে বের করে দিয়েছিলেন ঘর থেকে। যাদু মিয়া তখন ভারত থেকে পালিয়ে এসে পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ বিরোধিতা করেছেন।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান সাম্প্রদায়িক রাজনীতি চালু করেছিলেন। জিয়াউর রহমান যাদু মিয়াকে সিনিয়র মন্ত্রীও বানিয়েছিলেন। একাত্তরে গণহত্যার দোসর গোলাম আজমকে নাগরিকত্ব দিয়েছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের ভীত স্থাপন করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশ আজ স্যাটেলাইট যুগে। তিনি বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ স্থাপন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু সমুদ্রসীমার জন্য মামলা করেছেন। সেই বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন তার কন্যা শেখ হাসিনা। তার পক্ষেই সম্ভব বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা।
এর আগে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি ও ইটাখোলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাফিজুর রশিদ মঞ্জু যাদু মিয়ার নামে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজের নাম পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নীলফামারী জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন নীলফামারী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বাবু কান্তি ভূষণ, সাবেক উপজেলা কমান্ডার শহিদুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা জেসমিন নাহার প্রমুখ।
মাহমুদ আল হাসান রাফিন/এনএ