১৩ টাকা কেজিতে সরকারি বই বিক্রি করলেন প্রধান শিক্ষক
সিরাজগঞ্জের তাড়াশের রানীরহাটে অবস্থিত সিরাজগঞ্জ বাজার দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোমিনের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ মাধ্যমিক স্তরের সরকারি বিনা মূল্যের বই কেজি দরে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার রানীরহাট বাজারে। সরকারি বই বিক্রির খবর পেয়ে রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাড়াশ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফকির জাকির হোসেন অফিস সহকারীকে পাঠিয়ে ক্রেতার কাছ থেকে ৯০৩টি কেনা বই জব্দ করে অফিসে নিয়ে আসেন।
বই বিক্রি ও জব্দ করার বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন তাড়াশ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফকির জাকির হোসেন। তিনি জানান, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একটি লিখিত অভিযোগ প্রস্তুত করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার বিকেলে রানীরহাটের সিরাজগঞ্জ বাজার দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোমিন ছুটির পর স্কুলে একাই অবস্থান করেন। পরে তিনি গোপনে স্টোর রুমে সংরক্ষিত ২০১৯-২০২০ ও ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির বিভিন্ন বিষয়ের ১৬৩ কেজি ওজনে সরকারি বিনা মূল্যের ৯০৩টি বই বিক্রি করে দেন। বগুড়ার শেরপুর উপজেলার পাঁচদৈলী গ্রামের ফেরিওয়ালা সাব্বির হোসেন বইগুলো ক্রয় করে।
পরে বিকেলে ফেরিওয়ালা সাব্বির হোসেন বইগুলো রানীরহাট বাজারে একটি টঙের দোকানের সামনে রাখেন। তখন বাজারে আসা লোকজন সরকারি বই দেখে ফেরিওয়ালাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তখন ফেরিওয়ালা সাব্বির হোসেন জানান, তিনি রানীরহাটের সিরাজগঞ্জ বাজার দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোমিনের কাছ থেকে ১৩ টাকা কেজি দরে ১৬৩ কেজি বই ২ হাজার ১২০ টাকার বিনিময়ে কিনেছেন।
বই বিক্রির কথা স্বীকার করে রানীরহাট সিরাজগঞ্জ বাজার দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোমিন বলেন, স্কুলের অপ্রয়োজনীয় কাগজের সঙ্গে তিনি পুরাতন বইগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন। বই বিক্রির টাকায় ছাত্রীদের ব্যবহারের অনুপযোগী ওয়াশরুম মেরামত করা হবে।
অন্যদিকে সরকারি বই বিক্রির খবর জানাজানি হলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি করেন।
জানতে চাইলে তাড়াশ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফকির জাকির হোসেন বলেন, সরকারি বই বিক্রি করা অপরাধ। আমরা বিক্রি করা বইগুলো ইতোমধ্যেই জব্দ করেছি। বিষয়টি ইউএনও, ওসিসহ ঊর্ধ্বতনদের জানানো হয়েছে। আমরা প্রথমে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেব। যদি তিনি কোনো ব্যবস্থা না নেন সেক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শুভ কুমার ঘোষ/এসএসএইচ