ক্রেতা-সংকটে চাল আমদানিকারক ও খুচরা বিক্রেতারা
ভারত থেকে চাল আমদানি অন্যদিকে খোলাবাজারে সরকারি চাল বিক্রির প্রভাবে হিলি স্থলবন্দরে পাইকারি ও খুচরা বাজারে কমেছে সব ধরনের চালের দাম। তিন দিনের ব্যবধানে প্রকারভেদে কেজিতে চালের দাম কমেছে ২ থেকে ৩ টাকা।
দাম কমলেও বাজারে ক্রেতা না থাকায় বিপাকে পড়েছে আমদানিকারকরা ও খুচরা বিক্রেতা। এদিকে আমদানি করা চাল বন্দর থেকে দ্রুত চাল ছাড়করণে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
দেশের বাজার স্বাভাবিক রাখতে গেল ২৮ আগস্ট থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে শুরু হয় ভারত থেকে চাল আমদানি। আমদানি শুরুর প্রথম দিকে স্থানীয় বাজারে তেমন একটা প্রভাব না পড়লেও সম্প্রতি সরকারি নানা উদ্যোগে কমতে শুরু করেছে আমদানি করা চালের দাম। সরকারিভাবে খোলাবাজারে কম দামে চাল বিক্রির ফলে আমদানি করা চালের চাহিদা কমেছে অনেকটা যে কারণে বন্দরে এবং স্থানীয় বাজারে তেমন মিলছে না ক্রেতার দেখা।
আমদানি করা এসব চাল কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা কমলেও ক্রেতা না থাকায় বিপাকে পড়েছেন আমদানিকারক ও খুচরা বিক্রেতেরা। এদিকে খুচরা বাজারে চালের দাম কমায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে। তবে আরও দাম কমানোর দাবি তাদের।
হিলি বাজার ঘুরে দেখা যায়, ভারত থেকে আমদানি করা স্বর্ণা ও স্বর্ণা-৫ জাতের চাল কেজিতে ২ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা কেজি দরে, ৪৬ টাকা কেজি আটাশ চাল কেজিতে ২ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা দরে এবং সম্পা কাটারি কেজিতে ৩ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৫৪ টাকা দরে।
হিলির চালের আড়তদ্বার বাবুল মন্ডল ঢাকা পোস্টকে বলেন, হিলি পানামা পোর্টে ভারত থেকে চাল আমদানি হচ্ছে, অন্যদিকে খোলাবাজারে সরকার কম দামে চাল বিক্রি শুরু করেছে। এ কারণে আমাদের চাল বিক্রি কমে গেছে। চালের তেমন ক্রেতাও নেই। দাম কমেছে তারপরও ক্রেতারা চাল কিনতে এসে ঘুরে যাচ্ছে।
হিলির খুচরা বিক্রেতা মমিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগে আমাদের আড়ত থেকে প্রতিদিন দুই-তিনটি করে চালের ট্রাক দেশের বিভিন্ন মোকামে যেত। দোকান থেকেও দুই থেকে তিন শ বস্তা চাল বিক্রি হতো। আর এখন সারা দিন দোকানে বসে ১০ বস্তা চালও বিক্রি করতে পারি না। চাল বিক্রি না হওয়ায় আমরা বিপাকে পড়েছি।
বাজারে চাল কিনতে আসা সালাম ও নাজমুল নামের দুই ক্রেতা বলেন, আগের থেকে বাজারে চালের দাম কিছুটা কমেছে। এতে আমাদের জন্য ভালো। দামটা যদি আরও একটু কমত, তাহলে আরও ভালো হতো। আগের থেকে কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা কমেছে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা ৬০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছে। অনুমতি পাওয়ার পর আমরা এলসি খুলেছি এবং ইতোমধ্যে বন্দরে চালও ঢুকছে। ভারত অভ্যন্তরে পাইপলাইনে আমাদেও প্রচুর পরিমাণে চাল রয়েছে, সে চালগুলো কিছুদিনের মধ্যে বন্দরে ঢুকবে। আমদানি শুরুর দিকে মোকামগুলোতে চালের বেশ একটা চাহিদা ছিল, সেটা এখন আর নেই।
তিনি আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারিভাবে খোলাবাজারে স্বল্পমূল্যে চাল বিক্রির কারণে চালের চাহিদা কমে গেছে। বাজারে চালের বেচা-কেনা নেই, দামও নেই।
হিলি শুল্ক স্টেশনের উপকমিশনার কামরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কম শুল্কে চাল আমদানি স্বাভাবিক রয়েছে। আমদানিকৃত এসব চাল শুল্কায়ন করে বন্দর থেকে দ্রুত ছাড়করণে ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। এতে বন্দর অভ্যন্তরে চাল মজুতেও কোনো সুযোগ থাকছে না।
তিনি আরও বলেন, গেল ২৮ আগস্ট চাল আমদানি শুরু পর থেকে এখন পর্যন্ত ভারত থেকে সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে এই বন্দর দিয়ে।
এনএ