প্রেমের টানে উধাও গৃহবধূ উদ্ধার, হত্যার দায় থেকে মুক্ত স্বামী
স্বামীর বাড়ি থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হন গৃহবধূ (২৪)। খবর পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন তার বিধবা মা। টানা আট দিন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মেয়ের সন্ধান না পেয়ে তিনি জামাতার বিরুদ্ধে মেয়েকে অপহরণের পর হত্যা করে গুমের অভিযোগ তোলেন।
সেই অভিযোগ আমলে নিয়ে আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের দায়িত্ব দেন। এরপরই ওই গৃহবধূ নিখোঁজ হওয়ার অন্তরালের রহস্য উন্মোচন করে পিবিআই। তদন্তে উঠে আসে অন্য এক যুবক প্রলোভন দেখিয়ে ওই গৃহবধূকে অপহরণ ও ধর্ষণ করেছে।
এ ঘটনায় মিঠু মোল্লা (২৬) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার ওই যুবকের সঙ্গে মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল গৃহবধূর। এরই প্রেক্ষিতে মিঠু মোল্লা মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে পাবনা ও গাজীপুরে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেছে বলে জবানবন্দি দিয়েছেন ওই গৃহবধূ।
রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান রংপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন।
তিনি আরও জানান, নিখোঁজ ওই গৃহবধূকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভিকটিমের সুরক্ষা ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে গুরুত্বের সঙ্গে মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে।
প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ৯ আগস্ট স্বামীর বাড়ি থেকে ওই গৃহবধূ গুম হয়েছে বলে দাবি করেন তার বিধবা মা। এ ঘটনায় ১৭ আগস্ট আদালতে অভিযোগও দায়ের করেন তিনি। সেখানে তিনি জামাতার বিরুদ্ধে মেয়েকে অপহরণের পর হত্যা করে গুম করার অভিযোগ করেন।
আদালত থেকে মামলাটির তদন্তভার পেয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) পিবিআইয়ের একটি চৌকস টিম তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ওই গৃহবধূকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার সুমন ব্যাপারীর ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করে। এ ঘটনার মূলহোতা পাবনার চাটমোহর এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে ওই গৃহবধূর কথিত প্রেমিক মিঠু মোল্লাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শফিউল আলম বলেন, ওই গৃহবধূ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন তাকে ভুল বুঝিয়ে ও প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে ২৪ দিন ধরে পাবনা ও গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে মিঠু মোল্লা জোরপূর্বক আটকে রেখে ধর্ষণ করেছেন।
অভিযুক্ত মিঠু মোল্লাকে রোববার দুপুরে হাজিরহাট চিফ মেট্রোপলিটন আমলি আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে ওই গৃহবধূর স্বামীকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালতের বিচারক।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর