মামুনুলের বিস্ফোরক মামলায় অভিযোগ গঠন ১০ অক্টোবর
খুলনায় বিস্ফোরক মামলায় হেফাজতে ইসলাম নেতা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের দিন ১০ অক্টোবর ধার্য করেছেন আদালত। রোববার (০৫ সেপ্টম্বর) বেলা ১১টার দিকে খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারক এসএম আশিকুর রহমান অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য করেন।
এর আগে সকালে খুলনা জেলা কারাগার থেকে মামুনুল হককে আদালতে আনা হয়। এদিন সকাল থেকে খুলনা জেলা কারাগার ও আদালতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাড. কেএম ইকবাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ২০১৩ সালে গণজাগরণ মঞ্চ খুলনায় হেফাজত ইসলাম ও মৌলবাদী ইসলামী সংগঠনের বিপক্ষে অবস্থান নেয়। সেখানে মামুনুল হকসহ তার হাজার হাজার সমর্থক বিনা উস্কানিতে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর অতর্কিত হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ এবং জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। যে কারণে আজ খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামুনুল হককে হাজির করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলেছি, এই মামলায় তাকে শ্যোন অ্যারেস্ট এবং দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হোক। আসামি আদালতে হাজির হওয়ার পর বিজ্ঞ আদালত বলেন, তাকে শ্যোন এ্যারেস্ট করা হলো এবং আগামী ১০ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য করা হলো।
খুলনা জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানার একটি মামলায় খুলনা অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে রোববার হাজিরা দেওয়ার জন্য মামুনুল হককে জেলা কারাগারে আনা হয়।
মামলার চার্জশিট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বিকেল সোয়া ৪টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাতিল, গ্রেফতার করা যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি ও সরকার বিরোধী শ্লোগান দিয়ে জামায়াতে ইসলামী, বিএনপি ও হেফাজতে ইসলামীসহ ১২ দলের প্রায় ৩ হাজার মানুষ মিছিল বের করে। মিছিলটি নগরীর ডাকবাংলা ও ময়লাপোতা মোড় হয়ে শিববাড়ি মোড়ে গণজাগরণ মঞ্চের দিকে যাচ্ছিল। ফুজি কালার ল্যাবের সামনে পৌঁছালে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়।
এ সময় অংশগ্রহণকারীরা মিছিলের মধ্য থেকে পুলিশের ওপর ককটেল বোমা ও গুলি নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। নিক্ষিপ্ত বোমার আঘাতে কিছু পুলিশ সদস্য আহত হয়। সে সময় তাদের চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ২৬ জনকে গ্রেফতার করে থানায় আনা হয়।
এ ব্যাপারে ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ সোনাডাঙ্গা থানার এসআই আলমগীর কবীর বাদী হয়ে খুলনা মহানগর ইমাম পরিষদের কয়েকজন নেতা ও মাওলানা মামুনুল হকসহ ২৬ জনের নামে মামলা দায়ের করেন।
চার্জশিটে আরও উল্লেখ করা হয়, উক্ত ঘটনার আগের দিন ময়লাপোতা মসজিদ মোড়ে ওয়াজ করার সময় হাফেজ মামুনুল হকসহ অন্যান্যরা সংগঠিত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা ও গণজাগরণ মঞ্চ ভাঙচুরসহ পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনুসারীদের নির্দেশ দেন। ২০১৫ সালের ২১ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. মোক্তার হোসেন ১০৭ জনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ এসএম আশিকুর রহমান পূর্ববর্তী একটি কার্য দিবসে মামুনুল হককে রোববার আদালতে উপস্থিত করার জন্য নির্দেশ দেন। এ কারণে শুক্রবার তাকে কাশিমপুর কারাগার থেকে খুলনা কারাগারে আনা হয়।
মোহাম্মদ মিলন/এসপি