পদ্মার ভাঙনে মসজিদ বিলীন, দৌলতদিয়ার ৪ নম্বর ফেরিঘাট বন্ধ
পদ্মা নদীর ভাঙনে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার ৪ নম্বর ফেরিঘাট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ঘাটটি অন্য জায়গায় স্থানান্তরের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মকবুল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়ার সিদ্দিক কাজীরপাড়ায় নদী ভাঙনে একটি মসজিদের অর্ধেক অংশসহ পাঁচটি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ২০টি বসতভিটা ঝুঁকিতে থাকায় তা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভাঙনে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ৪ নম্বর ফেরিঘাটসহ আশপাশের ২ শতাধিক বাড়িঘর। ভাঙন ঠেকাতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও বিআইডব্লিউটিএ।
জানা গেছে, যার নামে ওই এলাকার নামকরণ করা হয়েছে সেই সিদ্দিক কাজীর বসতভিটা গতকাল সোমবার (৩০ আগস্ট) পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে।
সিদ্দিক কাজী বলেন, এটা আমার বাপ-দাদার পৈতৃক ভিটা ছিল। গতকাল নিমিষেই চোখের সামনে আমার ঘরবাড়ি নদীতে তলিয়ে গেছে।
সিদ্দিক কাজীরপাড়া জামে মসজিদের ইমাম মো. জুবায়ের হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সোমবার সকালে আমরা ফজরের নামাজ আদায় করে মসজিদ তালা মেরে চলে যাই। এরপর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে খবর পাই মসজিদের পেছনে ভাঙন শুরু হয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যে মসজিদের পাশে থাকা বসতভিটার কিছু অংশ তলিয়ে যায়। পরে মসজিদের টিউবওয়েল, পাকা শৌচাগার, অজুখানা এক এক করে নদীগর্ভে চলে যেতে থাকে। এর কিছুক্ষণ পরই মসজিদের পাকা ভবনের প্রায় অর্ধেক অংশ নদীতে চলে যায়।
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডল ঢাকা পোস্টকে বলেন, সিদ্দিক কাজীরপাড়ার একমাত্র মসজিদ ভেঙে যাওয়ায় এলাকার মানুষ কাঁদছে। দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট থেকে ৫ নম্বর ফেরিঘাট পর্যন্ত ২ নম্বর ওয়ার্ডের সিদ্দিক কাজীরপাড়ার প্রায় ২০০ পরিবার এবং লঞ্চঘাট ও ১ নম্বর ফেরিঘাটের মজিদ শেখেরপাড়ার ৬০০ পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মকবুল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল ভাঙনের পর থেকেই ভাঙনকবলিত স্থানে বালুভর্তি জিও টিউব ব্যাগ ও জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এছাড়া ৪ নম্বর ফেরিঘাট ঝুঁকিতে থাকায় তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং ঘাটটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটসহ কয়েকটি ফেরিঘাট ঝুঁকিতে থাকায় সেখানেও জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
মীর সামসুজ্জামান/আরএআর