বিশুদ্ধ পানির সংকটে পানিবন্দি মানুষ
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনার পানি বৃদ্ধির ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার। তবে সপ্তাহব্যাপী এসব মানুষ পানিবন্দি হলেও সরকারি-বেসরকারিভাবে তারা পায়নি কোনো ত্রাণসহায়তা।
এদিকে বসতঘরে পানি ওঠায় বিষাক্ত সাপের আতঙ্কে রাত পার করছেন তারা। এছাড়া বন্যার পানিতে টিউবওয়েল তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শুকনা খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কষ্টাপাড়া ঘোষপাড়া এলাকায় দেখা গেছে, যমুনা নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এতে ঘনবসতি ওই এলাকায় ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে।
এছাড়া তলিয়ে গেছে নাটমন্দির, দুর্গামন্দির ও গীতা স্কুল নামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ৫ দিন ধরে ওই এলাকার মানুষ পানিবন্দি হওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত সেখানে কোনো ত্রাণসহায়তা পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
জানা গেছে, উপজেলার চরাঞ্চল গাবসারা, অজুর্না ইউনিয়ন ছাড়াও গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি। এতে বন্যার পানি বাড়ি-ঘরে প্রবেশ করায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
এছাড়া পানি নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করায় ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। এছাড়া পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙন দেখা দিয়েছে কষ্টাপাড়া, খানুরবাড়ি, ভালকুটিয়া ও চিতুলিয়াপাড়া এলাকার যমুনা নদীতে। এতে ভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে শতাধিক পরিবার।
কষ্টাপাড়া গ্রামের মতি লাল বলেন, ‘৫ দিন হলো ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। এতে আশপাশের রাস্তাগুলোও তলিয়ে যাওয়ায় ঘর থেকে বের হতে না পারায় আয়-উপার্জনও নেই। ফলে কষ্টে দিন পাড় করতে হচ্ছে। কেউ এখন পর্যন্ত খোঁজ নেয়নি।’
এদিকে গেল ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি এক সেন্টিমিটার বেড়েছে। এতে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যমুনা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, কষ্টাপাড়া এলাকার যমুনা নদীর প্রায় ১০০ মিটার নিচুপাড় বস্তা ফেলে উঁচু করা হলে আশপাশের তিনগ্রামে বন্যা হবে না। কিন্তু প্রশাসন থেকে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। কেউ খোঁজও নেয় না। বন্যা-পরবর্তী কোনো ত্রাণসহায়তা আসলে সেগুলোও পায় না এই এলাকার মানুষজন।
গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বাবলু বলেন, এখন পর্যন্ত সরকাভিাবে কোনো ত্রাণসহায়তা আসেনি। কবে নাগাদ আসবে সেটাও জানা নেই। আসলে বন্যাকবলিতদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। তবে বন্যায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বহু মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইশরাত জাহান বলেন, সরকারিভাবে কোনো ত্রাণ সহায়তা এখনও পাওয়া যায়নি। পেলে সেগুলো দ্রুতই পানিবন্দি মানুষের মাঝে বিতরণ করা হবে।
এমএসআর