দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় টিকা প্রদানে বাংলাদেশ তলানিতে : জিএম কাদের
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার ব্যর্থ দাবি করে গণটিকা কার্যক্রম ও লকডাউন পরিস্থিতির কঠোর সমালোচনা করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
সরকার যেভাবে টিকা প্রদান করছে তাতে জাতীয় পার্টি সন্তুষ্ট নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মানুষ টিকার আওতায় এসেছে। কিন্তু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে আমরা তলানিতে রয়েছি। আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত মাত্র ২ থেকে ৩ ভাগ মানুষ টিকার আওতায় এসেছে। এছাড়া টিকা প্রদানে চরম বিশৃঙ্খলা লক্ষ্য করা গেছে। করোনা সংক্রমণ রোধে মানুষ টিকা নিতে কেন্দ্র গিয়ে সংক্রমিত হচ্ছে।
বুধবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে রংপুরের পল্লীনিবাসে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, সরকার লকডাউন দিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ২ কোটি মানুষকে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি করেছিলাম। এ জন্য প্রতি মাসে সরকারের প্রয়োজন ছিল ২০ হাজার কোটি টাকা। এক মাস এ অর্থ সহায়তা দিলে দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে চলে আসতো। যে দেশে মানুষের পেটে খাবার নেই, যাদের বাচ্চা দুধের জন্য কাঁদে, যারা ওষুধের অভাবে মারা যায় সেসব মানুষকে ঘরের ভেতরে আটকে রাখা সম্ভব নয়। তাই সরকারকে মানুষের জীবনের দিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সব কিছুর ঊর্ধ্বে জীবন। জীবনের জন্য আমরা রাজনীতি করি। উন্নয়নসহ সব কিছু আমাদের সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য। যদি জীবন না থাকলে তাহলে রাজনীতি ও উন্নয়নের কোনো অর্থ থাকে না। আমরা সংসদে, গণমাধ্যমে বলেছি প্রান্তিক পর্যায়ে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় স্বাস্থ্য বিভাগের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। সরকার ইতোমধ্যে কিছু কাজ প্রান্তিক পর্যায়ে বাস্তবায়ন করেছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
এ সময় বিদিশা ও এরিক এরশাদের মামলা প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে জিএম কাদের বলেন, বর্তমানে মামলাটি আদালতে চলমান। এ নিয়ে এখন কিছু বলতে চাই না। সময় হলে আপনাদের ডেকে বলব।
এ সময় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান, রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন, মহানগর যুব সংহতির সভাপতি শাহীন হোসেন জাকির, সাধারণ সম্পাদক আলাল উদ্দিন কাদেরী শান্তিসহ স্থানীয় জাতীয় পার্টি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে ছয় দিনের সফরে ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে পৌঁছান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। এ সময় তাকে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেন দলীয় নেতাকর্মীরা। পরে গাড়ি বহরে করে সৈয়দপুর থেকে রংপুরের পল্লীনিবাসে আসেন জিএম কাদের। সেখানে তিনি প্রয়াত রাষ্ট্রপতির কবর জিয়ারত করে লালমনিরহাটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। চার দিনের সফর কর্মসূচি শেষ করে লালমনিরহাট থেকে শনিবার (২১ আগস্ট) রংপুরে এসে দুইদিন থাকবেন জিএম কাদের।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর