ভারত থেকে ৩ ট্রাক আপেল আমদানি, দাম কমতে পারে
দীর্ঘ প্রায় ৭-৮ মাস পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি হলো আপেল। গত শনিবার (০৭ আগস্ট) ও রোববার (০৮ আগস্ট) সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৩টি ট্রাকে ৫১ মেট্রিক টন আপেল এসেছে।
শনিবার একটি ট্রাকে ১৭ মেট্রিক টন ও রোববার ২টি ট্রাকে ৩৪ মেট্রিক টন আপেল আমদানি হয়েছে। বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমস-এর সহকারী কমিশনার মমিনুল ইসলাম।
স্থলবন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত অক্টোবর-নভেম্বরে সোনামসজিদ দিয়ে প্রচুর পরিমাণে আপেল আমদানি হয়। তবে এ মহূর্তে ভারতে আপেলের মৌসুম নয়। ভারত যেহেতু একটি বিশাল দেশ, তাই সেখানকার কোথাও অসময়ে উৎপাদিত আপেল আমদানি শুরু হয়েছে। আগাম জাতের অসময়ের আপেল দীর্ঘদিন পর সোনামসজিদ দিয়ে আমদানি হওয়ায় আপেলের পাইকারি ও খুচরা দামে প্রভাব পড়বে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
গত মঙ্গলবার (০৩ আগস্ট) দায়িত্ব নেয়া সোনামসজিদ স্থলবন্দর সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কার্যকরী কমিটির সভাপতি হারুন অর রশীদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভারত অনেক বড় একটি দেশ। একপ্রান্তে শীত, আরেক প্রান্তে বর্ষা, অপরপ্রান্তে গ্রীষ্মকাল। তাই মৌসুম না হলেও এ সময়ে ভারতে আপেল উৎপাদন হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। বছরের নিদিষ্ট সময়ে একেক রকম পণ্য আমদানি হয়। কিন্তু কয়েকমাস পর সোনামসজিদ দিয়ে হঠাৎ আপেল আমদানি শুরু হয়েছে। অসময়ের এই আপেলের আমদানি শুরু হওয়া ভালো একটি ব্যাপার। এগুলো অগ্রিম জাতের ভারতীয় আপেল আমদানি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের ফলের পাইকারী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ঢাকা পোস্টকে জানান, বাজারে ভারতীয় আপেলের সরবরাহ থাকে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকৃতপক্ষে এই সময়টায় ভারতে আপেল উৎপাদন হয়। তবে এর কয়েক মাস পরেও কোল্ড স্টোরেজের আপেল আমদানি হয়। বাংলাদেশে বছরের বাকি সময়টাতে চীন থেকে আমদানিকৃত আপেল বাজারে থাকে। এমনকি বর্তমান সময়েও বাজারে চীনের আপেল সরবরাহ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মৌসুমের সময় ভারতীয় আপেল আমদানি হয় তখন দাম কমে ১১০-১২০ টাকা কেজি হয়। তবে বর্তমান বাজারে আপেলের দাম কেজিপ্রতি ১৮০-২০০ টাকা। অসময়ে যদি ভারতীয় আপেল আমদানি শুরু হয়, তাহলে অবশ্যই দাম কমবে।
সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের ম্যানেজার (অপারেশন) কামাল হোসেন জানান, সাধারণত এই সময়ে ভারত থেকে আপেল আমদানি হয় না। তবে আমাদের ধারণা আগাম জাতের আপেল আসা শুরু হয়েছে। আর দু-এক মাস পর থেকে পুরোদমে আপেল আমদানি শুরু হতে পারে।
সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমস-এর সহকারী কমিশনার মমিনুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা শুনেছি, ভারতে অসময়ে আপেল চাষাবাদ শুরু হয়েছে। তাই এই সময়ে ভারত থেকে আপেল আমদানি শুরু হয়েছে। সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে সর্বশেষ অক্টোবর-নভেম্বরে আপেল আমদানি হয়েছে।
গত শনিবার (০৭ আগস্ট) সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে ১০ হাজার ২৪৫ মেট্রিক টন ও রফতানি হয়েছে ৩৫ মেট্রিক টন পণ্য। রোববার (০৮ আগস্ট) ৮ হাজার ৮৫৬ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হলেও রফতানি হয়নি।
প্রসঙ্গত, সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আয় হয়েছে ৭০৭ কোটি ৮০ লাখ ৬ হাজার টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৭৩ কোটি ৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতির মধ্যেও যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৩৪ কোটি ৭৪ লাখ ৬১ হাজার টাকা বেশি।
জাহাঙ্গীর আলম/এমএএস